গত বছরের এপ্রিল মাসে ভবানীপুর থানা এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ পেয়েছিল। তার তদন্ত করতে করতে শেষ পর্যন্ত কাঁথিতে হদিস মিলল শিশু পাচারের একটি চক্রের! আরও জানা গেল, ওই চক্রে সামিল খোদ এক শিশু চিকিৎসক। এবং সদ্যোজাত কন্যাকে পাচার করেছে তার বাবাই।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে সোমবার কাঁথি থেকে ওই চিকিৎসক-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করেছেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা। কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, ধৃতের নাম সুমন হালদার। পাশাপাশি, এই চক্রে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে কাঁথির একটি নার্সিংহোমের ম্যানেজার নীলকমল সাহু, একটি ল্যাবের সহকারী কেশব দাস ও কাঁথি শহরের এক দোকানি ভবেশ গিরিকে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই নার্সিংহোমটি।
পুলিশ জানায়, ভবানীপুরের একটি বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করত মেদিনীপুরের রামনগরের বাসিন্দা পদ্মলোচন বেরা। এপ্রিল মাসে এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে পদ্মলোচন ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে ভবানীপুর থানা এবং লালবাজারের অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিট। ৮ জানুয়ারি কলকাতা পুলিশ জানতে পারে, অপহৃত ওই কিশোরী এবং পদ্মলোচন বাঁশদ্রোণীতে রয়েছে। সেখান থেকেই ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয় এবং ধরা পড়ে পদ্মলোচন। তাকে জেরা করেই খোঁজ মেলে শিশু পাচার চক্রের। পুলিশের দাবি, পদ্মলোচন জানায়, তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ফলে ওই কিশোরী গত অক্টোবরে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। সেই সদ্যোজাতকেই সে পাচার চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে।
ধৃত ছ’জনকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ আরও জানতে পারে, পুরো ঘটনাটিতে ৭৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। তিন মাসের ওই শিশুটি আছে বরাহনগরে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির কাছে। তার পরেই সোমবার অভিযান চালিয়ে পুলিশ জয়ন্তবাবুকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় শিশুটিও। তাকে এখন শহরের একটি হোমে রাখা হয়েছে।