পাটুলিতে এ ভাবেই চলেছে প্রচার। নিজস্ব চিত্র
পাটুলির ভাসমান বাজার ও তার আশপাশের এলাকায় রাস্তার পাশে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কয়েক জন প্রাতর্ভ্রমণকারী। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন ওই চত্বরে আবর্জনা ফেলা মাত্রই সক্রিয় হলেন তাঁরা। রাস্তার পাশে ফেলা সেই জঞ্জাল তুলে নিজেরাই ডাস্টবিনে ফেলে দিলেন। জঞ্জাল ফেলতে আসা স্থানীয়েরা যা দেখে রীতিমতো অস্বস্তিতে! অতঃপর, আবর্জনা সাফাইয়ে হাত লাগালেন তাঁরাও। সোমবার, বর্ষশেষের দিনে এ ভাবেই আবর্জনা সাফাইয়ে ‘গাঁধীগিরি’ করলেন পাটুলির বাসিন্দাদের একাংশ।
দক্ষিণ কলকাতার পাটুলিতে ভাসমান বাজার সংলগ্ন এলাকায় সৌন্দর্যায়ন করা হলেও বিভিন্ন অংশ অপরিষ্কার থাকে বলে অভিযোগ। কলকাতা পুরসভা থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের রাস্তায় জঞ্জাল পড়ে থাকতে দেখা যায়। অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকেই যত্রতত্র আবর্জনা ফেলেন। এই মানসিকতার পরিবর্তন আনতেই এ বার সচেষ্ট হলেন
এলাকার প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একটি সংগঠন ‘পাটুলি মর্নিং ওয়াকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’। ওই সংগঠন সূত্রে খবর, ভাসমান বাজার-সহ এলাকার যে সমস্ত এলাকায় রাস্তাতে আবর্জনা ফেলা দেওয়ার প্রবণতা বেশি, সেই সমস্ত জায়গাকেই বেছে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন ওই প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। ‘গাঁধীগিরি’র সৌজন্যে মন বদলাবে স্থানীয়দের,
এই আশায়।
‘গাঁধীগিরি’র এই উদ্যোগ কাজে লেগেছে বলেও দাবি সংগঠনের সম্পাদক ইন্দ্রনীল সাহার। তিনি বলছেন, ‘‘এই উদ্যোগে যে কাজ হয়েছে, তা স্পষ্ট। কারণ এলাকার অনেকেই এগিয়ে এসে নিজেদের ফেলে দেওয়া জঞ্জাল পরিষ্কার করছেন। এমনকি, নতুন করে রাস্তায় আর জঞ্জাল ফেলছেন না তাঁরা।’’ বছর শেষে বড়দিন থেকে শুরু করে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এলাকায় ভিড় বেশি থাকে। তাই, এই ধরণের সচেতনতামূলক প্রচারের জন্য বর্ষশেষের দিনটিকেই বেছে নিয়েছিলেন ইন্দ্রনীলবাবু ও সংগঠনের সহ-সম্পাদক ধীরেন্দ্রনাথ কুন্ডু। সংগঠন সূত্রের খবর, আগামী দিনেও ছুটির দিন দেখে এই কর্মসূচি ফের করা হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে পাটুলিকে ‘নো প্লাস্টিক’ এলাকা তৈরি করার পরিকল্পনাও করছেন তাঁরা।
এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন পুরসভার ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত সমাজ সতেচনমূলক কাজে এলাকার জনগণ এগিয়ে না আসবেন, ততক্ষণ শুধুমাত্র প্রশাসনিক বা পুরসভার পক্ষে ওই কাজে সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়।’’ তিনি জানান, শুধুমাত্র ভাসমান বাজারই নয়, এমন অভিনব উদ্যোগে আদতে উপকৃত হবে পাটুলি এলাকাই।