Doctor

রাস্তায় মহিলার সঙ্গে করমর্দন! হিরের আংটি খোয়ালেন শহরের নামী চিকিৎসক

কলকাতা শহরের এক জন প্রথম সারির ইউরোলোজিস্ট তিনি। কয়েক দশক ধরে কলকাতায় কয়েক হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:৩৯
Share:

পথেঘাটে লোকজনের সঙ্গে হাত মেলানো যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মোহনচাঁদ শীল।

Advertisement

কলকাতা শহরের এক জন প্রথম সারির ইউরোলোজিস্ট তিনি। কয়েক দশক ধরে কলকাতায় কয়েক হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন। তাই রাস্তাঘাটে হামেশাই দেখা হয়ে যায় তাঁদের অনেকের সঙ্গে। তিনি নিজে চিনতে না পারলেও ডাক্তারবাবুকে মনে রেখে দিয়েছেন রোগী বা রোগীর পরিবার। তাই কথা বলতেই হয়। কিন্তু, তার পরিণতি যে এতটা মারাত্মক হবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি ওই চিকিৎসক।

সে দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মোহনচাঁদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন পাড়ার সেলুনে চুল কাটাতে। এন্টালি থানা এলাকার সাবেক কনভেন্ট লেন বা ননীগোপাল রায় চৌধুরী সরণির বাড়ি থেকে সেলুনের দূরত্ব কয়েক মিনিটের হাঁটা পথ। তিয়াত্তর বছরের চিকিৎসক তাই পায়ে হেঁটেই যাচ্ছিলেন। সিআইটি রোডের মুখে সন্ধ্যা সুইটস। সেখানে পৌঁছতেই এক মধ্য বয়সী মহিলা তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। মহিলা তাঁকে নাম ধরে সম্বোধন করেন। সেই মহিলার সঙ্গে কথা বলতে বলতেই তিনি আরও খানিকটা পথ হাঁটেন। তার পর সেলুনের পথে যাওয়ার আগে ওই মহিলার সঙ্গে করমর্দনও করেন।

Advertisement

সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বাড়ি ফিরেই আক্কেলগুড়ুম। ডান হাতের অনামিকায় যে বড়সড় হিরের আংটি ছিল, তা গায়েব। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও হদিশ মেলে না তাঁর আংটির। শেষে তাঁর সন্দেহ হয় ওই মহিলাকেই। পরের দিনই রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, তিনি এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, লিখিত ভাবে অভিযোগ করে ওই দিনের ঘটনার কথা জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে তিনি চিনতে পারেননি। তবে ওই মহিলা নিজেকে এক জন রোগী হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। এক তদন্তকারী বলেন, “ওই মহিলা মোহনচাঁদকে নিজের বাড়ি নিয়ে গিয়ে চা খাওয়ানোর জন্য জোরাজুরিও করেছিলেন।” পুলিশ সূত্রে খবর, মোহনচাঁদ তদন্তকারীদের বলেছেন তিনি চা খেতে পারবেন না জানিয়ে যখন ওই মহিলার সঙ্গে যখন হাত মিলিয়েছিলেন, তখন একটা হালকা টান অনুভব করেছিলেন আঙুলে। কিন্তু তখন কিছু খেয়াল করেননি। পরে যখন আংটি বেপাত্তা দেখেন, তখন বিষয়টি তাঁর মনে পড়ে।

তদন্তকারীরা বৃদ্ধ চিকিৎসকের বর্ণনা অনুযায়ী ওই মহিলার কয়েকটি স্কেচও তৈরি করেছেন। মোহনচাঁদের বর্ণনা অনুযায়ী, মহিলা সুবেশা এবং সম্ভ্রান্ত। ইংরেজি ও বাংলা মিশিয়ে কথা বলছিলেন। সব মিলিয়ে মোহনচাঁদের সন্দেহের কোনও কারণ ছিল না। কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “এটা নতুন ঘরানার কেপমারির ঘটনা। পুজোর মুখে এই কেপমারদের উৎপাত শুরু হয়। এদের অধিকাংশকেই দেখলে বোঝা যায় না।” যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে কোনও সিসি ক্যামেরা ছিল না। পুলিশ আশেপাশের রাস্তায় লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সেখান থেকে অভিযুক্তের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। পাশাপাশি পুরনো কেপমারদের ছবিও দেখানো হচ্ছে বৃদ্ধ চিকিৎসককে। কিন্তু এর পর রাস্তাঘাটে অজানা কারও সঙ্গে করমর্দন? ঘটনা শুনে হাত গুটোচ্ছেন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement