বহুতলের একটি তলায় নির্বাচনী কার্যালয় তৈরিকে ঘিরে গোলমাল বাধল দু’টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে। পুলিশের অভিযোগ, মানিকতলা থানা এলাকার পি ৩৯ সিআইটি স্কিমের পাঁচতলা একটি আবাসনের দোতলায় জোর করে ঢুকতে যান বিজেপি-র কয়েক জন সমর্থক। স্থানীয়েরা জানান, শনিবার এই কাজে বাধা দিতে যান স্থানীয় কাউন্সিলর ও তাঁর সমর্থকেরা। এতেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয় বলে অভিযোগ। উত্তেজনা ছড়ানোয় ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মানিকতলা থানার পুলিশ। পৌঁছন ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাসও।
ওই আবাসনের অন্য দু’টি তলার বাসিন্দা কল্পনা বিশ্বাস এবং তাঁর দুই ভাই স্বপন বিশ্বাস ও তপন বিশ্বাস অভিযোগ করেন, দোতলাটি মহেশ গোয়েল নামে এক ব্যক্তি শাড়ি সংস্থার অফিস তৈরি করার জন্য কিনে নিয়েছিলেন। কিন্তু গত তিন বছর ধরে মহেশবাবুকে কেউ দেখেননি। কল্পনাদেবীর অভিযোগ, আচমকা গত বৃহস্পতিবার তাঁরা দেখেন, বিজেপি-র দলীয় কার্যালয় করার জন্য সেখানে হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে। অভিযোগ, সেখানে যাতায়াতকারীরা আবাসনের লিফটও ব্যবহার করতে শুরু করে দেন। আচমকা নিজেদের আবাসনে এত অচেনা লোকজনের যাতায়াত দেখে কল্পনাদেবীরা
প্রতিবাদ করেন বলে দাবি তাঁদের। পুলিশকে জানানো হয়েছে, আবাসিকেরা সকলে মিলে প্রতিবাদ জানালে সেই ফ্ল্যাটে আসা লোকজন সে দিনের মতো বেরিয়ে যান।
পরদিনই এ বিষয়ে মানিকতলা থানায় অভিযোগ জানান ওই বহুতলের বাসিন্দারা। এমনকি, ওই তলায় কোনও দলীয় কার্যালয় করা যাবে না বলে আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করিয়ে আনেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ, এর পরেও বিজেপি-র ২০-২৫ জন সমর্থক শনিবার সন্ধ্যার পরে জোর করে ওই ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ঢুকে পড়েন। এমনকি, বিজেপি-র সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহও সেখানে আসেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, এই খবর পেয়ে স্থানীয় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু সঙ্গীদের নিয়ে ওই বাড়ি ঘেরাও করেন। রাহুলবাবুর দাবি, নির্বাচনী কার্যালয় করার জন্য ফ্ল্যাটটি তাঁরা দোতলার মালিকের থেকে ভাড়া নিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাড়িটির মালিক হয়তো অন্য আবাসিকদের বিষয়টি জানাননি।’’
এ দিন তৃণমূলের ঘেরাও নিয়ে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান রাহুলবাবুরা। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ তা নিতে চায়নি। তিনি জানান, পরে অনলাইনে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে তাঁদের তরফে। আজ, রবিবার বিজেপি-র তরফে মানিকতলা থানা ঘেরাও করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে বলেও রাহুলবাবু দাবি করেন। এ দিকে শান্তিরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, ‘‘জোর করে বিজেপি ওই বাড়ির দোতলা দখল করছে। বহুতলের বাসিন্দারা আমাদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তাই ঘটনাটির প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম আমরা।’’