প্রতীকী ছবি।
সংশোধনাগারে বন্দি আবাসিকদের খাবারের পরিমাণ ঠিকঠাক রয়েছে কি না, তা দেখার জন্য বছরখানেক আগে তৈরি হয়েছিল একটি কমিটি। এ বার সেই খাবারের গুণগত মান এবং ক্যালরি পর্যালোচনা করার জন্য তৈরি করা হল একটি বিশেষ কমিটি। কারা দফতরের ডিজি অরুণ গুপ্ত জানিয়েছেন, সংশোধনাগারের ডায়েটও দীর্ঘ পুরনো। তাই শুধু খাদ্যগুণ পর্যালোচনা নয়, বিশেষ কমিটি সেই ডায়েট পরিবর্তন করতে বললে তা-ও করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘অনেক বন্দিই এখন আর ভাত খেতে চান না। ফলে ভাতের পরিবর্তে রুটি বা অন্য কিছু খাবার দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। তার আগে বিষয়টি কমিটির মাধ্যমে যাচাই করে নেব আমরা।’’
কারা দফতরের একটি সূত্রের খবর, ২০০৭-০৮ থেকে এ রাজ্যের জেলগুলিকে সংশোধনাগারে উন্নীত করা হয়। তখন থেকেই বন্দি আবাসিকদের দৈনন্দিন জীবনের মানোন্নয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু হলেও সংশোধনাগারে বন্দিদের খাবার নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। কখনও অভিযোগ উঠেছে খাবারের মান নিয়ে, আবার কখনও খাবারের পরিমাণ নিয়ে।
কারা দফতর সূত্রের খবর, ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এ়ডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইপিজিএমইআর) এবং এসএসকেএম হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক রঘুনাথ মিশ্র (বর্তমানে এসএসকেএম-এর সুপার) এবং ডায়েটিশিয়ান কল্পনা চৌধুরী-সহ ১৫ জনকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ওই বিশেষ কমিটি। কমিটির কাজ হবে সংশোধনাগারের বন্দিদের খাদ্য তালিকা দেখে তার ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রয়েছে কি না, তা পর্যালোচনা করা। যদিও কারা দফতর জানাচ্ছে, ২০১৭ সালেই বন্দি আবাসিকেরা ঠিক মতো খাবার পাচ্ছেন কি না, তা দেখার জন্য নিজস্ব একটি কমিটি তৈরি হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়াকেই ভাল করে পর্যালোচনা করার জন্য এই বিশেষ কমিটি গড়া হল বলে দফতর সূত্রের খবর।
কারা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশোধনাগারে সশ্রম কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরাও থাকেন। সরকারি ভাবে তাঁদের জন্য বরাদ্দ খাবারে কতটা ক্যালরি রয়েছে এবং সেটা এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য পর্যাপ্ত কি না, তা-ও পর্যালোচনা করবে এই কমিটি। প্রয়োজনে পরামর্শও দেবে দফতরকে।
সাধারণত সংশোধনাগারের আবাসিকেরা বাইরে থেকে কোনও খাবার কিনতে পারেন না। দৈনন্দিন তাঁদের জন্য যে খাবার বরাদ্দ থাকে তার বাইরে কিছু খেতে চাইলে সংশোধনাগারের ক্যান্টিন থেকে নিজেদের টাকায় কিনে খেতে হয়। কিন্তু অনেক বন্দিই আছেন যাঁদের ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। নতুন এই কমিটির পরামর্শ মতো খাবারের গুণগত মান আগের থেকে ভাল হলে তাঁদের সুবিধা হবে বলেই মনে করছেন কারা দফতরের কর্তারা।