প্রতীক্ষায় রোগী, মুখ ঘুরিয়ে চালক

বিকেল ৪ টে। একই ভাবে হাসপাতালের মূল গেটের বাইরে একাধিক ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ধরা পড়ল। কিন্তু কোনও রোগীকে কিংবা রোগীর আত্মীয়কে নিয়ে যেতে রাজি নন সেই ট্যাক্সিচালকেরাও। দু’টি ছবিই সুপার স্পেশ্যালিটি এসএসকেএম হাসপাতালের মূল গেটের বাইরের ছবি।

Advertisement

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০১:২৫
Share:

নৈরাজ্য: সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্যাক্সি। —নিজস্ব চিত্র।

দুপুর দেড়টা। পেটের যন্ত্রণায় কাতর বৃদ্ধা ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরবেন বলে আত্মীয় ও ছেলেকে নিয়ে কোনও রকমে এসএসকেএমের মেন গেটের সামনে এসে বসে পড়লেন। সামনেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে তখন ছ’-সাতটি ট্যাক্সি। রয়েছে ‘নো-রিফিউজাল’ দু’টি এসি ট্যাক্সিও। কিন্তু মুখ ঘোরাচ্ছেন সব চালকই। কেউ বা তিন গুণ দর হাঁকছেন। অগত্যা মাকে আত্মীয়ের সঙ্গে রাস্তার এক ধারে বসিয়ে ছেলে রাস্তার অন্য প্রান্তে গিয়ে চলন্ত খালি ট্যাক্সি ধরার অপেক্ষা করতে লাগলেন। আধঘণ্টায় কোনও ট্যাক্সি পেলেন না।

Advertisement

বিকেল ৪ টে। একই ভাবে হাসপাতালের মূল গেটের বাইরে একাধিক ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ধরা পড়ল। কিন্তু কোনও রোগীকে কিংবা রোগীর আত্মীয়কে নিয়ে যেতে রাজি নন সেই ট্যাক্সিচালকেরাও। দু’টি ছবিই সুপার স্পেশ্যালিটি এসএসকেএম হাসপাতালের মূল গেটের বাইরের ছবি।

বাইরে থেকে রোগী এবং তাঁর পরিবারকে নিয়ে আসা ট্যাক্সির দাপটও এখানে কিছু কম নয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের ভিতরে রোগী নামিয়ে সেই ট্যাক্সিচালকেরা ফিরে যাওয়ার পথে নিজেদের মর্জি-মাফিক চলেন বলে জানাচ্ছেন রোগীর পরিজনেরা। অনেকে রোগীর কথা মতো যেতে রাজি হলেও দর হাঁকেন প্রায় দ্বিগুণ। সকালই হোক বা বিকেল, মিটারে যেতে রাজি নন তাঁরা। শিয়ালদহ স্টেশন যেতে ন্যূনতম ২০০ টাকা, ধর্মতলা ১০০ টাকা। দক্ষিণ কিংবা উত্তরের কোনও জায়গা হলে তো কথাই নেই।

Advertisement

অভিযোগ, এক দু’ দিনের কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় এগুলি। সকাল-রাত্রি এসএসকেএমের ভিতর কিংবা বাইরে রোগী কিংবা রোগীর পরিবারকে ট্যাক্সির জন্য এভাবেই হয়রানির শিকার হতে হয়।

প্রশ্ন উঠছে, এসএসকেএম-র মতো সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মূল গেটের সামনে কী করে এত ট্যাক্সি দাঁড়ায়? আর হাসপাতালে আসা রোগী বা তাঁদের পরিবারের লোকজনকে প্রত্যাখান করে কী করে?

ডিসি ট্র্যাফিক ভি সলোমন নেসাকুমারের কথায়, ‘‘ট্যাক্সি প্রত্যাখান করলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে অভিযোগ করতে হবে। গত কয়েক মাস এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে জমা না পড়ায় এখনের এই পরিস্থিতির কথা আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ যদিও হাসপাতালে আসা রোগী বা তাঁর আত্মীয়দের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের ভিতরে ফাঁড়ির পুলিশকে বললে এ ধরনের অভিযোগ নেওয়া তাঁদের দায়িত্বে পড়ে না বলে জানান। এরপর রোগী নিয়ে কোথায় সার্জেন্ট আছেন তা খুঁজে দেখা সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন