Civet Cats

পর পর বিলুপ্তপ্রায় ভামের মৃত্যুতে চিন্তা রবীন্দ্র সরোবরে

রবীন্দ্র সরোবরে নিয়মিত যাওয়া তীর্থঙ্কর রায়চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার হয় একটি ভাম বেড়ালের মৃতদেহ। এর পরে ওই মাসেরই ২১ তারিখ আরও একটি ভামের দেহ মেলে সরোবরের মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৩৬
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

গত দু’মাসে তিনটি ভাম বেড়ালের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে রবীন্দ্র সরোবর চত্বর থেকে। ওই জাতীয় সরোবরে নিয়মিত যাতায়াত করেন, এমন অনেকেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তায়। রবীন্দ্র সরোবরের ‘বার্ড ওয়াচিং কমিউনিটি’র তরফে পুরো বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে সরোবরের রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কেএমডিএ-কে। তারা সবটা জানিয়ে চিঠি দিচ্ছে বন দফতরেও। কেএমডিএ-র দাবি, বিরল প্রজাতির এবং বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণীটির সুরক্ষার জন্য কী ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তা জানাতে হবে।

Advertisement

রবীন্দ্র সরোবরে নিয়মিত যাওয়া তীর্থঙ্কর রায়চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার হয় একটি ভাম বেড়ালের মৃতদেহ। এর পরে ওই মাসেরই ২১ তারিখ আরও একটি ভামের দেহ মেলে সরোবরের মধ্যে। সরোবরে সাফাইয়ের কাজ করা পুরসভার কর্মীদের একটি দল মৃতদেহ দু’টি সরিয়ে নিয়ে যায়। গত বুধবার অভীক রায় নামে এক ব্যক্তি রবীন্দ্র সরোবরে আর একটি ভামের মৃতদেহ দেখতে পান। শুক্রবার অভীক বলেন, ‘‘সাফারি পার্কের দিক দিয়ে সরোবরে ঢুকে সাফারি পার্কের দিকে না গিয়ে সোজা এগোলে যেখানে পৌঁছনো যায়, সেখানেই ভামটির দেহ পড়ে ছিল। কোনও কামড়ের দাগ ছিল না। বয়সজনিত কারণেও এই মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। কারণ, ওই ভামটির বয়স বেশি নয় বলেই আমাদের অনুমান।’’

রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের দাবি, নগরায়ণের ঠেলায় এমনিতেই প্রকাশ্যে সচরাচর দেখা যায় না এই ভামেদের। তাই তাদের বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনের দু’নম্বর শিডিউলের পার্ট-২ তালিকায় রাখা হয়েছে। বাঘ-সিংহের মতো ভাম ধরা বা মেরে ফেলা গুরুতর অপরাধ। সেখানে এ ভাবে একের পর এক মৃত্যুর কারণ কী?

Advertisement

রবীন্দ্র সরোবরে নিয়মিত যাওয়া সুদীপ ঘোষ বলছেন, ‘‘সরোবরের আশপাশের বেশ কিছু বাড়িতে কোনও কোনও ভাম ঢুকে পড়ে থাকতে পারে। এরা ফল-মূল তুলে নিয়ে আসে। সেই রাগ থেকে বিষ দিয়ে ভাম মেরে ফেলার ঘটনাও অস্বাভাবিক নয়। তা ছাড়া, সরোবরে কুকুর রয়েছে। তাদের হামলাও ভামের মৃত্যুর একটি কারণ হতে পারে।’’ অনেকে আবার মনে করছেন, সরোবর চত্বরে কোথাও বৈদ্যুতিক তার পড়ে থাকার কারণেও এই মৃত্যু ঘটে থাকতে পারে।

সরীসৃপবিদ অনির্বাণ চৌধুরী যদিও বললেন, ‘‘পর পর ভামের মৃত্যু চিন্তার বিষয় ঠিকই। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে ভামেদের বংশবিস্তারের সময়। পুরুষ ভাম এই সময়ে একটু বেশি হিংস্র হয়ে ওঠে। ফলে নিজেদের মধ্যে মারামারি করেও ভামের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। কুকুর বা অন্য প্রাণীদেরও শত্রু এই ভাম। রবীন্দ্র সরোবরের ভিতরে কুকুরের সংখ্যা কেমন, সেটাও দেখা দরকার।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেএমডিএ-র এক কর্তা বললেন, ‘‘সব দিক থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আমাদের তরফে কিছু করণীয় থাকলে দ্রুত করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন