ভাঙাচোরা: এমনই অবস্থা অর্জুনপুরের েসই সেতুর। নিজস্ব চিত্র
প্রায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে সেতুর বুকে ঝোলানো রয়েছে সতর্কবার্তা। অবিলম্বে সেই সেতু মেরামত করা না হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন অর্জুনপুরের বাসিন্দারা।
দমদমের মল রোড থেকে অর্জুনপুর, রঘুনাথপুর এবং বাগুইআটি যাতায়াতে ক্যান্টনমেন্ট খালের উপরে অবস্থিত অর্জুনপুর সেতু দিয়ে সারাদিন প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করত। মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরপরই সেই সেতুকে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে সেচ দফতর। গত অক্টোবরে পরিদর্শনের পরে ওই সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহনের যাতায়াত আটকানো নিশ্চিত করেছিল সেচ দফতর। তিন মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও মেরামতি শুরু না হওয়ায় স্থানীয়েরা বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখছেন।
ওই সেতুতে গিয়ে দেখা গেল, এক দিকের ফুটপাত ভেঙে রড বেরিয়ে গিয়েছে। দু’ধারের কোনও রেলিং আস্ত নেই। বস্তুত, এমন কোনও অংশ নেই যেখানে সেতুর ক্ষয় রোগের চিহ্ন ধরা পড়ছে না। তালতলার দিকে সেতু যেখানে জোড়া লেগেছে সেখানের চাঙড় খসে কঙ্কালসার চেহারা দেখা যাচ্ছে। সেতুর একাধিক জায়গায় চিড় ধরেছে। কোথাও কোথাও তা ফাটলের আকার নিয়েছে। সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহনের যাতায়াত আটকাতে দু’পাশে কাঠের ব্যারিকেড দিয়েছিল সেচ দফতর। কিন্তু সেই ব্যারিকেডও এখন ভেঙে গিয়েছে!
স্থানীয় দোকানদার স্বপন রাজবংশী বলেন, ‘‘সপ্তাহ খানেক আগে সকালে দোকান খোলার সময়ে দেখি ব্যারিকেড কেউ ভাঙার চেষ্টা করেছে। সম্ভবত রাতে কোনও গাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করায় ব্যারিকেডের এমন হাল হয়েছে। এর পর থেকে মাঝেমধ্যেই রাতে ভাঙা ব্যারিকেডের ফাঁক গলে গাড়ি যাতায়াত শুরু হয়েছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর গুহ বলেন, ‘‘দ্রুত সেতুর মেরামত না হলে যে কোনও দিন বিপর্যয় হবেই। এরই মধ্যে তো বাইক, টোটো, অটো যাচ্ছে! সেতুর যা অবস্থা, ছোট গাড়ির ভারও নিতে পারবে না।’’
সেচ দফতর সূত্রের খবর, দফতরের অধীনে থাকা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের ভার ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাঝেরহাট বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে খবর। সেচ দফতর সূত্রের খবর, অর্জুনপুর সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের ভারও পূর্ত দফতরকে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই টানাপড়েনে সেতু সারাইয়ের কাজ শুরু হবে কবে? সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর আবেদনে সাড়া না দিলে জরুরি ভিত্তিতে অর্জুনপুর সেতুর মেরামতি সেচ দফতরই করবে। তার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’’