রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এসি বাসে

এত দিন ঠান্ডা ছিল। তাই টের পাওয়া যায়নি। কিন্তু গরম পড়তেই আসল চেহারাটা বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও এসি চলছে না তো, কোথাও এসি থেকে ঝরঝর করে জল পড়ছে। সিএসটিসি-র এসি বাসগুলির অনেকগুলিরই এখন এমন দশা।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৯
Share:

এত দিন ঠান্ডা ছিল। তাই টের পাওয়া যায়নি। কিন্তু গরম পড়তেই আসল চেহারাটা বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও এসি চলছে না তো, কোথাও এসি থেকে ঝরঝর করে জল পড়ছে। সিএসটিসি-র এসি বাসগুলির অনেকগুলিরই এখন এমন দশা।

Advertisement

গত মঙ্গলবারই পর্ণশ্রী যাবেন বলে সরকারি এসি বাসে ওঠেন বেহালার এক দম্পতি। ভলভো বাসের পিছনের দু’টি আসনে বসতে গিয়ে তঁদের চোখ কপালে ওঠার জোগা়ড়। মাথার উপর থেকে জল পড়তে দেখে আসন ছেড়ে কন্ডাক্টরের উপর যাবতীয় ক্ষোভ উগরে দেন দম্পতি। ধমক খেয়ে মুখ কাঁচুমাচু করে কন্ডাক্টর জানিয়ে দিলেন, তাঁদের কার্যত কিছুই করার নেই। গত এক সপ্তাহ ধরে এসি মেশিন সারানোর কথা বলেও কোনও লাভ হয়নি। ওই কন্ডাক্টরের কথায়, ‘‘সবে তো গরম প়ড়েছে। এখনই এই অবস্থা। মে-জুন মাসে কী অবস্থা হবে ভেবে আমরা আশঙ্কিত।’’

কিন্তু কেন এমন হাল?

Advertisement

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে সিএসটিসি কেন্দ্রের জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে ৬৩২টি বাস পেয়েছিল রাজ্য। তার মধ্যে ২৩৪টি এসি বাস। যার মধ্যে ৬৩টি ভলভো এসি। অন্যগুলি অশোক লেল্যান্ডের। পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, বাস কেনার পরে দু’বছর পর্যন্ত ওয়ারান্টি পিরিয়ডের মধ্যে ছিল। তাই, বাসের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কোনও চিন্তাই ছিল না। কলকাতার পাঁচটি ডিপোয় ভলভোর ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে। তাঁদের অধীনে সিএসটিসি-র ইঞ্জিনিয়ারেরা বাসের দেখভাল করেন। প্রতিটি বাসের এসি মেশিনও যে সংস্থার, তাদের
প্রতিনিধি এসে বাসের এসি মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ করে যেত। কিন্তু বছরখানেক আগে এসি মেশিনের ওয়ারান্টি পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরেই বিপত্তির সূত্রপাত।

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, ‘‘বছরখানেক আগেই যে সংস্থার এসি, তাদের হাতেই রক্ষণাবেক্ষণের ভার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। ফলে, বছরখানেক ধরে এসি’র কার্যত রক্ষণাবেক্ষণই চলছে না।’’ ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। কোথাও এসি থেকে জল পড়ছে, কোথাও বা এসি কাজই করছে না। সরকারি পরিবহণ নিগমগুলিতে সে ভাবে এসি ঠিক করার কর্মী না থাকায় সমস্যা আরও বেড়েছে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘সমস্যার সমাধান করতে বোর্ড মিটিংয়েই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার পরে সংশ্লিষ্ট সংস্থার হাতে এসি রক্ষণাবেক্ষণের ভার তুলে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন