—প্রতীকী ছবি।
শুধু চিকিৎসক ও নার্স নয়, এক জন রোগীর সার্বিক সুস্থতার নেপথ্যে পার্শ্ব স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাঁদের আরও দক্ষ করে তুলতে এ বার তিন দিনব্যাপী এক সম্মেলনের আয়োজন হল শহরে।
সেখানে বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের কথায় উঠে আসবে পার্শ্ব স্বাস্থ্যকর্মী বা প্যারামেডিক্যাল টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণের মানোন্নয়ন, প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা, জনস্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে তাঁদের ভূমিকার কথা। ২০১৩ সালে সিউড়ির জনাকয়েক মহিলা ও তফসিলি জাতি-জনজাতি সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের নিয়ে পার্শ্ব স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ শুরু করেছিল শহরের একটি সংস্থা। সেটির মুখ্য সংগঠক, শল্য চিকিৎসক শতদল সাহা বলেন, ‘‘পার্শ্ব স্বাস্থ্যকর্মীদের শিক্ষার মান বাড়ানো এবং অভিন্নতা অর্জনের বাধ্যতামূলক প্রয়োজন রয়েছে। সর্বোপরি, তাঁরা রোগীদের পরিষেবা প্রদানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই স্বাস্থ্য পরিষেবা বিশেষজ্ঞদের মূল্যবান মতামতের মাধ্যমে একটি সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির সূচনার জন্যই এই সম্মেলনের আয়োজন।’’
হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাড়িতে চিকিৎসা পরিচর্যার কাজ করেন এই পার্শ্ব স্বাস্থ্যকর্মীরা। বীরভূমে একটি কেন্দ্র দিয়ে পথ চলা শুরু করে শতদলদের সংস্থা এখন এই রাজ্য-সহ অসম, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ভোকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদন নিয়ে চারটি রাজ্যের মোট ১০টি কেন্দ্র (এর মধ্যে দু’টি রয়েছে আইআইটি গুয়াহাটি এবং ইন্দোরে) থেকে গত কয়েক বছরে প্রায় সাড়ে চার হাজার জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। যাঁরা দেশের প্রায় ৬০টি হাসপাতালে কর্মরত। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাগত যোগ্যতায় ছ’মাস বা এক বছরের প্রশিক্ষণ শেষে অনুমোদন প্রদানকারী তিন সংস্থার যৌথ শংসাপত্র পান শিক্ষার্থীরা।
শতদল জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে ডেটা সায়েন্স, ডায়াগনস্টিক, থেরাপিউটিক ডিভাইস-সহ বিভিন্ন প্রযুক্তির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের কাছে উচ্চ মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই সব স্বাস্থ্যকর্মী, বিশেষত যাঁরা জনগোষ্ঠীতে কাজ করেন, তাঁদের প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তোলাই মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি সার্বিক স্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে এবং রোগের বোঝা কমাতে পার্শ্ব স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। সেটিও সমাজে তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে আগামী কাল, শনিবার পর্যন্ত চলবে এই সম্মেলন।