খাবারের পাতেই মিটল ঘটি-বাঙালের দ্বন্দ্ব

শুধুই যে খাবারের স্টল, মানুষের ভিড় আর ভরপুর বিকিকিনি, তা কিন্তু নয়।

Advertisement

অন্তরা মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৫
Share:

রসনাতৃপ্তি: আনন্দবাজার পত্রিকা আয়োজিত ‘পত্রিকা এক পাতে দুই বাংলা’ খাদ্য উৎসবে ভিড়। শনিবার, সল্টলেকে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

এ পার বাংলা আর ও পার বাংলা মিলেমিশে একাকার বাঙালির জিভে! পশ্চিমবঙ্গের নারকেল চিংড়ির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বাংলাদেশের চিতল মুইঠ্যা। উত্তর কলকাতার হাঁসের ডিমের ডেভিলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বরিশালি মশলা দিয়ে মুরগির কাবাব। এমন অভাবনীয় ঘটনাই তিন দিন ধরে ঘটে চলেছে সল্টলেক সিটি সেন্টারের প্রাঙ্গণে। আনন্দবাজার পত্রিকা আয়োজিত ‘পত্রিকা এক পাতে দুই বাংলা’ খাদ্যমেলায় দু’বেলা পাত পড়ছে ভোজনরসিকদের। দুই বাংলার নানা ধরনের খাবারের স্টল নিয়ে এমন মহাসমারোহে অতএব খুশি এ শহরের ভোজনরসিকেরা।

Advertisement

শুধুই যে খাবারের স্টল, মানুষের ভিড় আর ভরপুর বিকিকিনি, তা কিন্তু নয়। চলছে এ পার-ও পারের নানা স্বাদের মেনু নিয়ে প্রতিযোগিতাও। ও পারের আনারস ইলিশের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়ছে এ পারের ডাব মৌরলা, আবার এ পারের কাঁচকলার কালিয়াকে চ্যালেঞ্জ করছে ও পারের পদ্মাবিলাস! উদ্যোক্তাদের তরফে জানা গেল, আনন্দবাজার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে জমা পড়েছিল অসংখ্য আবেদনপত্র। শুধু কলকাতা নয়, হাওড়া, মালদহ, বর্ধমান থেকেও এসেছেন বহু প্রতিযোগী। সেখান থেকে বাছাই করে, কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালের ভিত্তিতে রবিবার হবে চূড়ান্ত পর্বের বিচার। এ পার বাংলার রান্না নিয়ে থাকবেন দুই প্রতিযোগী, ও পার বাংলার রান্না নিয়েও থাকবেন দু’জন। বিজয়ী পাবেন ‘এক পাতে দুই বাংলা সেরা রাঁধুনি’র পুরস্কার। তা ছাড়া, দুই বাংলার সেরা রান্নার পুরস্কারও থাকবে প্রতিযোগীদের জন্য।

বিচারক হিসেবে থাকছেন শেফ-ট্রেনার দেবজিৎ মজুমদার, আইএইচএম-এর প্রাক্তন অধ্যক্ষ দেবাশিস দাস, হলিডে ইন-এর এগজ়িকিউটিভ শেফ জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সেলিব্রিটি ফুড ব্লগার ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ী।

Advertisement

মেলা চত্বরে কলকাতার মিত্র ক্যাফে, আহেলি, বিজলী গ্রিল, আপনজন ছাড়াও রয়েছে খাস বাংলাদেশের স্টল আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে। সেখানে থাকছে মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি, ভুনি খিচুড়ি, বরিশালি ইলিশ মাছ ভাজার মতো ও পারের নানা সুখাদ্য। বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার তৌফিক হাসান উৎসব নিয়ে বলছিলেন, ‘‘উদ্যোগটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। দুই বাংলার মধ্যে অনেক মিল থাকলেও খাদ্যাভ্যাসে আবার কিছু অমিলও চোখে পড়ে। বাংলাদেশের রান্নায় আদা-পেঁয়াজ-রসুনের আধিক্য থাকে। এখানে সেটা সব রান্নায় থাকে না। এই ধরনের অনুষ্ঠানের ফলে কলকাতার মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন।’’

শুধুই ইলিশ-চিংড়ি-চিতল-মুরগি নয়। রয়েছে দুই বাংলার মিষ্টিরও নানা বৈচিত্র্য— ছানা ভাজা, ছানার মহিমা, ম্যাঙ্গো মোহিনী, গোপালভোগ, ক্ষীরের মালপোয়া। সুতরাং শপিং মল থেকে কেনাকাটা সেরে খাবারের মহোৎসবে সোজা ঢুকে পড়ে রসনা তৃপ্তির ভালই বন্দোবস্ত হয়েছে শহরবাসীর জন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন