গাঁজার ব্যবসা নিয়ে মা-ছেলের দ্বন্দ্ব। আর তার জেরেই ছেলের হাতে মা খুন!
২৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের কাছে ময়দানের একটি ঝোপে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয়েছিল ময়ূরজান শেখ নামে এক মহিলার দেহ। তদন্তে নেমে রবিবার পুলিশ ময়ূরজানের বড় ছেলে শেখ রবিউল ওরফে অরুণকে ধরে।
তদন্তকারীদের দাবি, গাঁজার ব্যবসা নিয়ে বচসার জেরেই রবিউল মা-কে গলা টিপে খুন করে। তার পরে দেহ ফেলে দেয় সেপটিক ট্যাঙ্কে। সেটা ২৪ ডিসেম্বর শনিবার রাতের ঘটনা। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই ঝোপের কাছেই একটা হেস্তনেস্ত করতে মা-কে ডেকেছিল রবিউল। বচসা চরমে উঠলে সে তাঁকে খুন করে। ওই জায়গা থেকে ২০০ মিটার দূরে, পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলের নীচে ময়ূরজান ও তাঁর ছেলেরা পরিবার নিয়ে থাকতেন।
২৭ তারিখ সকালে এক যুবক কাগজ কুড়োতে গিয়ে ময়ূরজানের দেহ দেখতে পান। ময়না-তদন্তে বোঝা যায়, ওই মহিলাকে গলা টিপে খুন করা হয়েছে। তাঁর দেহে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে সেগুলি মৃত্যুর পরে হওয়া। পুলিশের ধারণা, খুনের পরে দেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলার সময়ে ওই সব জায়গায় আঘাত লেগেছিল।
ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ময়ূরজানের পড়শিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তখনই তারা জানতে পারে, ময়ূরজান বহু দিন ধরেই গাঁজার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। ব্যবসা করে পাওয়া টাকা নিত তাঁর তিন ছেলে। কিন্তু কিছু দিন যাবৎ বড় ছেলে রবিউলের সঙ্গে ময়ূরজানের গোলমাল শুরু হয়েছিল। মায়ের কাছ থেকে টাকা পাওয়া প্রায় বন্ধ হয়েছিল রবিউলের। এ দিকে, সে আবার বিয়ে করেছিল। সব মিলিয়ে রবিউল আলাদা করে গাঁজার ব্যবসা শুরু করে। পুলিশের অনুমান, এতে ময়ূরজানের রাগ বাড়ে। কারণ তাঁর বক্তব্য ছিল, তাঁর ব্যবসার খদ্দেরদের টেনে নিচ্ছে রবিউল। ফলে ব্যবসার বখরা নিয়েই বিবাদ চরমে ওঠে মা-ছেলের।
কী ভাবে ধরা পড়ল ২২ বছরের রবিউল? পুলিশ জানায়, গাঁজার ব্যবসা নিয়ে রবিউলকে জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে সে সাফ জানায়, তার এমন কোনও কারবার নেই। তখনই তদন্তকারীদের সন্দেহ হয়। তার পরে, রবিউলের কাছ থেকে গাঁজা নেয় এমন এক খদ্দেরের হদিস পায় পুলিশ। তাকে রবিউলের মুখোমুখি বসানো হয়। পুলিশের দাবি, তখন জেরায় ভেঙে পড়ে রবিউল মা-কে খুনের কথা কবুল করে।