রাজাবাগানের মিঠা তালাওয়ে ন’বছরের বালিকার বহুতলের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় সেই বাড়ির প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে থানায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করলেন মেয়েটির বাবা। একই সঙ্গে উঠে এসেছে বেআইনি নির্মাণের প্রসঙ্গও।
পুলিশ জানায়, কৈকাসা খাতুন ওরফে সানিয়া নামে ওই নাবালিকা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে খেলছিল। ওই বহুতলের ছাদে পাঁচিল ছিল না। খেলতে খেলতে কখন সে পাশের একটি নির্মীয়মাণ চারতলা বাড়ির ছাদে উঠে যায়, সেটা কেউ খেয়াল করেননি। সেখান থেকে সে সোজা নীচে পড়ে যায়। বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজিতে নিয়ে যাওয়া হলে সানিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
ওই বিষয়টিকে উল্লেখ করে সানিয়ার বাবা মহম্মদ সুলতান শুক্রবার রাতে রাজাবাগান থানায় আট জন প্রোমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই আট জন মিলে বাড়িটি তৈরি করছেন। বহুতলের চারতলার উপরে ছাদ তৈরি করার পরেও পাঁচিল না দেওয়ার ফলে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে সুলতানের দাবি। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, বেআইনি ভাবে বহুতলটি তৈরি হয়েছে।
পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ‘৩০৪ এ’ ধারা অর্থাৎ, গাফিলতিতে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে মামলা রুজু করেছে। অভিযুক্তেরা সকলে স্থানীয় বাসিন্দা। শনিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এক অফিসার বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মামলা রুজু করেছি। আগে আমরা দেখব, দুর্ঘটনায় মেয়েটির মৃত্যুর পিছনে কারও সত্যিই গাফিলতি আছে কি না।’’
তবে কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, কোনও নির্মীয়মাণ বহুতলের ছাদ তৈরি হয়ে যাওয়ার পরেই সেখানে পাঁচিল দিতে হবে, এমনটা পুর আইনে কোথাও বলা নেই। রাজাবাগানের ওই তল্লাট পুরসভার ১৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তপসিরা বেগম বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক। তবে ওই বহুতল বেআইনি ভাবে নির্মাণ করা হচ্ছিল কি না, এই মুহূর্তে তা বলা সম্ভব নয়। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ বহুতলটি বেআইনি কি না, সেই ব্যাপারে তাঁদের কাছেও কোনও খবর নেই বলে দাবি পুলিশের। তবে পুরসভার একটি সূত্রে বলা হয়েছে, ওই বহুতল নিয়ে এখনও কেউ কোনও অভিযোগ জানায়নি, তবে সত্যি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।