Consumer Court

খাবারে ভেজাল-কারচুপিতে ক্ষতিপূরণের নির্দেশই বহাল

প্যাকেট খুলে বিস্কুট বার করে মুখে দিতেই তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন নারকেলডাঙার বাসিন্দা সুরঞ্জন মল্লিক। সুতোর মতো কিছু দাঁতে জড়িয়ে যায় তাঁর।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০১:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি

প্যাকেট খুলে বিস্কুট বার করে মুখে দিতেই তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন নারকেলডাঙার বাসিন্দা সুরঞ্জন মল্লিক। সুতোর মতো কিছু দাঁতে জড়িয়ে যায় তাঁর। সেই সঙ্গে কামড়ে ফেলেন শক্ত কিছুতে। বিস্কুটটি মুখ থেকে বার করে দেখেন, তাতে পাটের সুতোর মতো কিছু একটা জড়িয়ে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বিস্কুটের মধ্যে একটি ধাতব টুকরোও খুঁজে পান তিনি।

Advertisement

টালিগঞ্জ এলাকার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সুরঞ্জন বছর ছয়েক আগে কলেজের কাছেই একটি মুদির দোকান থেকে ওই বিস্কুটের প্যাকেটটি কিনেছিলেন। নামী সংস্থার তৈরি বিস্কুটের প্যাকেটে এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে প্রথমে মুদির দোকানের মালিককে তা জানান তিনি। পরে বিস্কুট প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। সুরঞ্জনের অভিযোগ, আগরপাড়ার ওই সংস্থার এক প্রতিনিধিকে ঘটনাটির কথা জানানো হলেও তাঁরা বিষয়টিতে আমল দেননি।

সুরঞ্জন বলেন, ‘‘ওই ঘটনার মাসখানেক পরে সেই মুদির দোকান থেকে একই সংস্থার তৈরি তিন প্যাকেট সয়াবিন কিনতে গিয়ে দেখি, প্রতিটি প্যাকেটের গায়ে ওজন ৬৫ গ্রাম লেখা থাকলেও আদতে তা রয়েছে ৫০ গ্রাম।’’ এর পরে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ওই সংস্থার বিরুদ্ধে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা করেন।

Advertisement

২০১৫ সালের ২৬ মে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত মামলার রায় দিতে গিয়ে জানায়, সল্টলেকের ন্যাশনাল টেস্ট হাউসে বিস্কুটের নমুনা পরীক্ষা করানোয় তাতে ভারী ধাতব পদার্থ মিলেছে। পাশাপাশি, ওই সংস্থার তৈরি সয়াবিনের প্যাকেটেও জিনিসের ওজন কম থাকার প্রমাণ মিলেছে।’’ ওই সংস্থাকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করে বিচারক মামলাকারীকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩৫ হাজার টাকা এবং রাজ্য ক্রেতা কল্যাণ তহবিলে (স্টেট কনজিউমার ওয়েলফেয়ার ফান্ড) পঞ্চাশ হাজার টাকা জমা দিতে নির্দেশ দেন।

পরে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে গিয়েছিল ওই সংস্থাটি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক শ্যামল গুপ্ত এবং উৎপলকুমার ভট্টাচার্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়ই বহাল রাখেন। এই রায় প্রসঙ্গে ওই সংস্থার সিইও বিক্রম আগরওয়াল বলেন, ‘‘রায়ের

প্রতিলিপি এখনও হাতে পাইনি। আমাদের আইনি বিভাগের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ করব।’’ অভিযোগকারী যুবকের আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, ‘‘আমার মক্কেল অনেক সাহস করে এই ধরনের নামী সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওঁর মতো অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। আমরা যত দূর যেতে হয় যাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন