প্রশ্ন: পার্কিংয়ের এই জায়গা নিয়েই সরগরম পুরসভা। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের আর কোথাও স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বাড়ির গাড়ি রাখার জন্য পার্কিং ফি মকুব হয়নি। ব্যতিক্রম রডন স্কোয়ারের তিন হাজার বর্গফুট এলাকা। সেখানে কয়েকটি নির্দিষ্ট স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বাড়ির গাড়ি রাখা হয় বিনামূল্যে। কেন কয়েকটি স্কুলের অভিভাবকদের জন্যই এমন ব্যবস্থা, এ বার তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে কলকাতা পুরসভা।
প্রায় ৩০ বছর আগে পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণির মধ্যে থাকা রডন স্কোয়ারে একটি সংস্কৃতি ভবন এবং কমিউনিটি সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা নেয় তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। সবুজ ধংস করে তা করা চলবে না এই দাবি তুলে সে সময় আন্দোলন শুরু করেছিল বিরোধী কংগ্রেস। জোরদার সেই আন্দোলনে বন্ধ হয়ে যায় সরকারের কর্মসূচি। এত কাল পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সেই এলাকার সৌন্দর্যায়নে এ বার উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন।
ওই প্রকল্প কার্যকর করতে গিয়েই দেখা গিয়েছে রডন স্কোয়ারের তিন হাজার বর্গফুট এলাকায় ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। এবং সেটি কয়েকটি মাত্র স্কুলের অভিভাবকদের গাড়ির জন্য। সেই সব গাড়ির জন্য পার্কিং ফি যে পুরসভা মকুব করেছে তা নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে। কয়েকটি মাত্র স্কুলের জন্য কেন এই ছাড় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসক দলের একাধিক কাউন্সিলরও। তাঁদের কথায়, ‘‘শহরে এমন অনেক স্কুল রয়েছে, যেখানে গাড়ি রাখার সমস্যা রয়েছে। তা হলে শুধুমাত্র রডন স্কোয়ারের ভিতরে এই সুযোগ দেওয়া হবে কেন?’’
আরও পড়ুন: পাঁচ তলা থেকে পড়েও প্রাণরক্ষা শিশুর
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানান, ওই এলাকাটা ঘিঞ্জি। গাড়ি রাখার জায়গা কম। একসঙ্গে অনেকগুলো স্কুল রয়েছে। তবে ওই নোটিশ পুরসভার নয় বলে তিনি জানান। পুরসভার এক অফিসার জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে ওটা দেওয়া
হতে পারে।
এ দিকে পুরসভায় গুঞ্জন, ওই এলাকায় একাধিক স্কুল রয়েছে, যেখানে কলকাতা ও রাজ্যের উচ্চপদস্থ আমলা, পুলিশ অফিসারদের ছেলেমেয়েরা পড়াশুনো করেন। তাঁদের সুবিধার জন্য এ সব করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রে এ ব্যাপারে অবশ্য কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
তবে পুরসভার এক আমলার কথায়, ‘‘রডন স্কোয়ারের আগের প্লটটাই হল পার্কোম্যাট। গাড়ি তো সেখানেও রাখা যায়।’’ তিনি জানান, ওই পার্কোম্যাটও তৈরি হয়েছিল প্রাক্তন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আমলে। পার্কোম্যাটের বেশির ভাগ জায়গা খালি পড়ে থাকে। ফলে রডন স্কোয়ারে নতুন করে পার্কিংয়ের জায়গা তৈরি করে বিতর্ক তৈরির সুযোগ না দেওয়াই ভাল ছিল বলে মনে করেন ওই অফিসার।