আগে যেমন ছিল
জলাশয় বোজানো নিয়ে তৃণমূলের দুই বিধায়কের দ্বন্দ্বে কার্যত সুজিত বসুর পাশেই দাঁড়াল সরকার।
গত ১০ জুন বিধানসভার উল্লেখ পর্বে বিধাননগরের তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসুর এলাকায় লেকটাউনে একটি নয়ানজুলি বোজানোর প্রসঙ্গ টেনেছিলেন রাজারহাটের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। সব্যসাচী অবশ্য তখন সুজিতের নাম উল্লেখ করেননি। বুধবার বিধানসভাতেই বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী জানিয়ে দিলেন, ভিআইপি রোডের ধারের জলাশয় বোজানো হয়নি। বরং, পূর্ত দফতর সেখানে বাঙুর অ্যাভিনিউ থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত দু’টি জলাশয়-সহ পার্শ্ববর্তী জমির সৌন্দর্যায়ন করছে।
সুজিতের নাম না করে সব্যসাচী ভিআইপি রোডের ধারে নয়ানজুলি বোজানোর যে অভিযোগ তুলেছিলেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জলঘোলা হয়েছে। সুজিত বা কোনও নেতার নাম না করলেও সব্যসাচীর অভিযোগ ছিল, ভিআইপি রোডে গোলাঘাটা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার বিস্তৃত পূর্ত দফতরের একটি নয়ানজুলি জবরদখল হয়ে যাচ্ছে। এ দিন অবশ্য সুজিতের আনা ‘উল্টোডাঙা থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত ভিআইপি রোডের পশ্চিমাংশের উন্নয়ন’ সংক্রান্ত দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে পূর্তমন্ত্রী জানান, উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত সার্ভিস রোডটির উন্নয়ন হয়েছে ৩১২.১৩ লক্ষ টাকার বরাদ্দ অর্থে এবং ওই অংশে ৪৬১.৬৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যায়নের কাজও চলছে। এ ছাড়া বাঙুর অ্যাভিনিউ থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত দু’টি জলাশয়-সহ জমির সৌন্দর্যায়নের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ জন্য আনুমানিক খরচ হবে ৯৫৬.৬৫ লক্ষ টাকা। মন্ত্রী জানান, লেক টাউন থেকে বাঙুর অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সার্ভিস রোডটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর সৌন্দর্যায়নের কাজ করছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা।
এখন তারই একাংশ
সুজিত বা কোনও নেতার নাম না করলেও এর পিছনে রাজনৈতিক মদত রয়েছে বলে গত ১০ জুন দাবি করেছিলেন সব্যসাচী। দলের একাংশের অভিমত ছিল, সব্যসাচী কৌশলে দলীয় বিধায়ক সুজিতকে প্রোমোটারি-রাজের সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন পূর্তমন্ত্রীর বিবৃতির পরে দলের অনেকেই মনে করছেন, দুই বিধায়কের দ্বন্দ্বে সল্টলেকের বিধায়কের পাশেই দাঁড়াল সরকার। মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে বিধানসভার অলিন্দে সুজিত বলেন, ‘‘মন্ত্রীর যা বলেছেন, এর পরে আমার আর কী বলার থাকে! যাঁরা অভিযোগ করছিলেন, তাঁরা আশা করি জবাব পেয়ে গিয়েছেন।’’ আর বিধানসভার বাইরে সব্যসাচীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভাল কথা! আমি তো বিধানসভার স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট দেখেই ওই নয়ানজুলি বোজানোর অভিযোগ তুলেছিলাম। এখন মন্ত্রী যদি বলেন, পূর্ত দফতরের কাজ হচ্ছে, তো হচ্ছে!’’