গ্রিন করিডর ধরে পরীক্ষায়

পরীক্ষার প্রথম দিনে এই কেন্দ্র বিভ্রাটের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন অভিভাবকেরা। অ্যাডমিট কার্ডে সাধারণত পরীক্ষা কেন্দ্রের নামের বদলে একটি কোড থাকে। তা যাচাই করে স্কুলের তরফেই পড়ুয়াদের জানানো হয় কোথায় তাদের সিট পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০২:০৫
Share:

পরীক্ষা শুরু হতে বাকি কয়েক মিনিট। অথচ তখনও পরীক্ষার্থীরা জানে না তাদের পরীক্ষা কেন্দ্র কোথায়! স্কুলের তরফে দেওয়া তথ্যানুযায়ী মঙ্গলবার পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে অথৈ জলে পড়ে পাতিপুকুর পল্লিশ্রী বিদ্যালয়ের ২০ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এই পরিস্থিতিতে তাদের সহায় হন লেক টাউন থানার দুই সাব ইনস্পেক্টর। গ্রিন করিডর তৈরি করে পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছে দেওয়া হয় ঠিক কেন্দ্রে। মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে এ ভাবেই ভুল কেন্দ্রে পৌঁছে যাওয়া এক ছাত্রীকে ঠিক পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছিল ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ।

Advertisement

পরীক্ষার প্রথম দিনে এই কেন্দ্র বিভ্রাটের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন অভিভাবকেরা। অ্যাডমিট কার্ডে সাধারণত পরীক্ষা কেন্দ্রের নামের বদলে একটি কোড থাকে। তা যাচাই করে স্কুলের তরফেই পড়ুয়াদের জানানো হয় কোথায় তাদের সিট পড়েছে। অভিভাবকদের দাবি, প্রধান শিক্ষক জয়দীপ গুহঠাকুরতা পরীক্ষার্থীদের জানান, সিট পড়েছে পাতিপুকুর আদ্যনাথ বিদ্যামন্দিরে। সেই মতো পরীক্ষার্থীরা মঙ্গলবার সকাল ১০টার কিছু আগে ওই স্কুলে পৌঁছয়। এর পরেই জানা যায় ভুল কেন্দ্রে এসেছে তারা। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল মারফত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
দুশ্চিন্তায় ছাত্রেরা কাঁদতে শুরু করে। কিছু একটা সমস্যা হয়েছে বুঝে এগিয়ে যান এসআই সুরজিৎ হালদার। এসআই প্রশান্ত মাহাতোর

গাড়িও স্কুল থেকে একটু দূরেই ছিল। তাঁকেও ডেকে নেন সুরজিৎবাবু। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে দু’জনে জানতে পারেন, সম্ভবত দমদম পার্কের কৃষ্ণপুর আদর্শ বিদ্যামন্দির ওই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্র। সুরজিতের কথায়, ‘‘নিশ্চিত ছিলাম না। কিন্তু ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। একটা বছরের প্রস্তুতি মাটি হয়ে যেত।’’

Advertisement

নিজেদের দু’টি গাড়িতে ২০ জন পরীক্ষার্থীকে তুলে নেন লেক টাউন থানার দুই সাব ইনস্পেক্টর। তাদের মধ্যে দু’জন প্রতিবন্ধী ছাত্রও ছিল। জানানো হয় লেক টাউন ট্র্যাফিক গার্ডে। তিন কিলোমিটারের বেশি রাস্তায় সিগন্যাল সবুজ রেখে পৌঁছে দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের।

স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘আমার মোবাইল নম্বর কাজ করছে না। নতুন ফোন নম্বর অভিভাবক বা জেলা স্কুল প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে দেওয়া হয়নি। তাই পরীক্ষা কেন্দ্র পাতিপুকুর আদ্যনাথ বিদ্যামন্দির থেকে বদল হয়ে যে কৃষ্ণপুর আদর্শ বিদ্যামন্দির হয়েছে তা জানতে পারিনি!’’

যদিও ব্যারাকপুরের ডিআই দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘‘অন্তত ১৫ দিন আগে সব স্কুলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোন পড়ুয়ার কোথায় পরীক্ষা কেন্দ্র। গাফিলতি নিশ্চিত ভাবে প্রধান শিক্ষকের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন