Coronavirus

কোয়রান্টিনে দুই চিকিৎসক, হাওড়ায় ত্রস্ত পুরকর্মীরা

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাওড়া পুরসভার দুই চিকিৎসককে হোম-কোয়রান্টিনে পাঠানোর ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে পুরসভার কর্মীদের মধ্যে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০৫:১৭
Share:

ছবি: পিটিআই।

কলকাতা পুরসভার পরে এ বার করোনা-আতঙ্ক হাওড়া পুরসভাতেও!

Advertisement

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাওড়া পুরসভার দুই চিকিৎসককে হোম-কোয়রান্টিনে পাঠানোর ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে পুরসভার কর্মীদের মধ্যে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনে পুরসভার একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। খবর ছড়িয়ে পড়ায় পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা-পজ়িটিভ এক রোগীর সরাসরি সংস্পর্শে আসায় এক চিকিৎসককে কোয়রান্টিনে পাঠিয়ে তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় চিকিৎসক আবার ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাই তাঁকেও কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনই তাঁর নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে না। পুরসভার দাবি, দু’জনের কারওরই করোনার উপসর্গ মেলেনি। তবু এত জন স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও অফিসারের কথা ভেবেই তাঁদের কোয়রান্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গত সপ্তাহে পুরসভার একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ‘ন্যাশনাল আর্বান হেলথ মিশন’-এর ওই চিকিৎসকের কাছে করোনার প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে এসেছিলেন এক রোগী। পরে ওই রোগী করোনা-পজ়িটিভ বলে জানা যায়। খবর জানতে পেরেই ওই চিকিৎসক ও তাঁর সহকর্মী এক চিকিৎসককে সোমবার থেকে হোম-কোয়রান্টিনে যেতে বলা হয়। সংক্রমণের আশঙ্কায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনার জেরে ‘রং ফিকে’ হালখাতারও

পুরসভা সূত্রের খবর, যে চিকিৎসক সরাসরি করোনা-রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন, গত সাত দিনে তিনি পুরসভার অন্য চিকিৎসক-সহ বহু কর্মীর সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। বৈঠকেও হাজির ছিলেন। সেই কারণেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরকর্মীদের মধ্যে।

হাওড়ায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এমনিতেই পুর স্বাস্থ্য দফতরে কর্মীদের হাজিরা কমতে থাকে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাম্বুল্যান্স ও মৃতদেহ বহনকারী গাড়িগুলির দায়িত্ব দেওয়া হয় পার্সোনেল অফিসার সোমনাথ দাসকে। যে শ্মশানে করোনায় মৃতদের দাহ করা হচ্ছে, সেখানে সব ব্যবস্থা করার দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়।

পুরসভার চিকিৎসককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে ও তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য গিয়েছে, শুধুমাত্র এই খবরেই তোলপাড় পড়ে যায় বিভিন্ন দফতরে। এ দিন পুরসভায় গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য দফতর প্রায় ফাঁকা।

ওই দফতরের এক চিকিৎসক বললেন, ‘‘খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকেই কেউ আসছেন না। কয়েক জন চিকিৎসককে রাত ৩টে পর্যন্ত থেকে কাজ করতে হচ্ছে। ওই চিকিৎসকের সঙ্গে সকলেই কাজ করেছি। রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে মারাত্মক সমস্যা হবে।’’

পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী দুই চিকিৎসককে হোম-কোয়রান্টিনে যেতে বলা হয়েছে। এক চিকিৎসকের লালারস পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার আগেই লোকজন অহেতুক আতঙ্কিত হচ্ছেন।’’ পুরকর্মীদের অনেকের আশঙ্কা, রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে পুরকর্তাদের অনেককেই হোম-কোয়রান্টিনে যেতে হবে। সকলেই ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কাজ করেছেন।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন