Coronavirus

বিদেশ থেকে সটান বাড়িতে, লুকোচুরি পুলিশের সঙ্গে

রাজ্য সরকারের র্নিদেশ রয়েছে, বিদেশ থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামলে বা করোনা-আক্রান্ত রাজ্য থেকে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে লোকজন ফিরলেই তাঁদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হবে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০১:১২
Share:

ফাইল চিত্র

পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পর্যবেক্ষণে থাকার ভয়। তাই হাওড়ার যে বাসিন্দারা বিদেশ বা ভিন্ রাজ্য থেকে আসছেন, তাঁদের নিয়ে রীতিমতো চোর-পুলিশ খেলা শুরু হয়েছে। একাধিক এলাকা থেকে অভিযোগ আসছে, ওই সব লোকজন সরাসরি বাড়ি ফিরেছেন। এলাকাতেও ঘোরাফেরা করছেন। আরও অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে পুলিশ যখন তাঁদের কোয়রান্টিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়িতে যাচ্ছে, তখন তাঁরা হয় পালাচ্ছেন অথবা লুকিয়ে পড়ছেন।

Advertisement

রাজ্য সরকারের র্নিদেশ রয়েছে, বিদেশ থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামলে বা করোনা-আক্রান্ত রাজ্য থেকে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে লোকজন ফিরলেই তাঁদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। কিন্তু এই নির্দেশ থাকলেও কার্যত দেখা যাচ্ছে, বহু মানুষ সরাসরি বাড়ি চলে গিয়েছেন। হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কারা বিদেশ থেকে কোন বিমানে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন তার তালিকা বিমানবন্দর থেকে জেলাশাসকের দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। তালিকা ধরে ইতিমধ্যে ৭০০-রও বেশি মানুষকে ১৪ দিনের গৃহ পর্যবেক্ষণে (হোম আইসোলেশন) রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিন্তু অভিযোগ, এর বাইরেও হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে, বিদেশ বা ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পরিবার বা ব্যক্তি নির্দেশিকার পরোয়া না করে বাড়িতে রয়েছেন, এলাকায় ঘুরছেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, চ্যাটার্জিহাটের কাঁকড়াপাড়া, দাশনগরের শানপুর, ব্যাঁটরার নটবর পাল রোড, জ়েড রোড-সহ বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে। সোমবার শিবপুরের কাসুন্দিয়া রোডের কয়েক জন বাসিন্দা পুলিশকে জানান, আমেরিকা থেকে একটি পরিবার গত শুক্রবার বাড়ি ফিরে এলাকায় ঘুরছেন। বাসিন্দারা কোয়রান্টিনের কথা বললেও কানে তুলছেন না। একই অভিযোগ উঠেছে হাওড়া ময়দান এলাকার বাসিন্দা এক দম্পতির ক্ষেত্রেও। অভিযোগ, তাঁরা সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরে সোজা চলে আসেন বাড়িতে। পরে পুলিশ তাঁদের খুঁজতে গেলে লুকিয়ে পড়েন।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই ধরনের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গেলে হয় তাঁরা লুকিয়ে পড়ছেন, অথবা পালাচ্ছেন। এই অপরিণামদর্শিতার ফল কী হবে, বুঝতেই পারছেন না তাঁরা।’’ ডিসি (সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘ওই সব লোকের খোঁজ চলছে। এমন কত জন হাওড়া শহরে রয়েছেন, আমরা দেখছি।’’

এ দিকে, লকডাউন সত্ত্বেও মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন রাস্তায় জটলা চোখে পড়েছে। বালি, মালিপাঁচঘরা, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, নিবড়া মোড়ে ভিড় হটাতে পুলিশকে লাঠি হাতে তাড়া করতে দেখা গেলেও অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাট খোলা ছিল। ছিল মোটরবাইক-বাহিনীর দাপটও। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম ভাঙার জন্য জগাছা এলাকা থেকে চার জনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁদের বুঝিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী ছাড়া আর কিছুর দোকান যাতে খোলা না-হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য দোকানদারদের সতর্ক করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন