ফাইল চিত্র
বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখিয়ে বা ভর্তি রোগীর ছুটি হলে বাড়ি ফিরতে অ্যাম্বুল্যান্সও মিলছে না! লকডাউনের জেরে বন্ধ প্রায় সব দোকান। খাবার নেই। যার জেরে ভুগছেন রোগীর আত্মীয়েরা। তেমনই এক জন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তেহট্টের এক রোগীর আত্মীয় প্রভাত মণ্ডল। তিনি জানালেন, চা-বিস্কুট খেয়ে দিন কাটছে। দু’দিন ধরে আর কিছু জোটেনি তাঁর। এমন পরিস্থিতিতে দিশাহারা রোগী ও আত্মীয়েরা।
ঘরে ফেরার আতঙ্কে হাসপাতাল থেকে ছেলের ছুটিই করাতে চাইছেন না হাসনাবাদের তহিদুল জামাল। বুধবার তিনি জানান, তিন মাস ধরে তাঁর ছেলে ভর্তি এসএসকেএমে। ডাক্তার ছুটি দিতে চাইলেও তিনি ঠেকিয়ে রেখেছেন। এ দিন বাধ্য হয়ে পরিচিতের মোটরবাইকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মা পুষ্পা কুশওয়াহাকে এসএসকেএমে নিয়ে যায় বছর সতেরোর মেয়ে ঋতু। সে বলল, ‘‘পরিচিত এক জন বাইকে নামিয়ে দিয়েছেন। এখন ভাবছি, ফিরব কী ভাবে?’’
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা এক রোগীকে এ দিন দেখা গেল, বেশ কিছু ক্ষণ ফেরার চেষ্টায় রাস্তায় ছোটাছুটি করতে। কিছু না পেয়ে বসেই পড়লেন হাসপাতাল চত্বরে। তাঁর আত্মীয় কমলেশ চৌধুরী বললেন, ‘‘ফিরতে পারলাম না। কোথায় থাকব, কী খাব, কিছুই বুঝতে পারছি না।”
বন্ধ ট্রেন-বাস। মিলছে না অ্যাম্বুল্যান্স। অহেতুক আতঙ্কে চালক গাড়িই চালাতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। এনআরএসের বহির্বিভাগের এক রোগীর আত্মীয় হালিশহরের অজয় পাল বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও চালক করোনার ভয়ে রোগীই নিতে চাইছেন না!’’
বুধবার এই তিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ স্বাভাবিক দিনের তুলনায় ছিল অনেকটাই ফাঁকা। তা-ও অবশ্য অনেক রোগীই ‘দূরত্ব বজায়’ রাখার পরিবর্তে কাছাকাছি আসতে স্বচ্ছন্দ। তিন জায়গাতেই দেখা গেল, পুলিশকে লাঠি উঁচিয়ে ভিড় সরিয়ে দিতে। তবে দিন কয়েক আগের সঙ্গে এ দিনের ছবির মূল পার্থক্য, বহির্বিভাগের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই মুখে মাস্ক পরেছিলেন।