জনশূন্য: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সদাব্যস্ত জরুরি বিভাগ এখন সুনসান। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
ছিল কোয়রান্টিন কেন্দ্র। হতে চলেছে করোনা হাসপাতাল। রাজারহাটে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটকে করোনা হাসপাতালে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য।
বুধবার স্বাস্থ্য-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, রাজারহাটের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে ২০০ শয্যার একটি হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। বেলেঘাটা আইডি-তে শয্যা না-থাকলে সেখানে করোনা-রোগীদের পাঠানো হবে। এ দিন চিকিৎসক সুকান্ত বিশ্বাসকে নতুন করোনা হাসপাতালের সুপার পদে নিয়োগ করা হয়েছে। নার্সিং সুপারের পাশাপাশি নিয়োগের তালিকায় দু’জন ফার্মাসিস্ট এবং তিন জন ল্যাব টেকনিশিয়ানও আছেন। স্বাস্থ্য-অধিকর্তার কথায়, ‘‘ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন বা হাঁপানি নিয়ে যে রোগীরা কোয়রান্টিনে রয়েছেন, আপাতত তাঁরা থাকবেন। আইডি-তে আরও রোগীর জায়গা না-হলে করোনা রোগীদের রাজারহাটে ভর্তি করা হবে।’’ সেখানে অবশ্য এখনই ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট থাকছে না।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও করোনা হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ। সেই খবর না-থাকায় ভোগান্তির শিকার হন শ্রীরামপুর হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে আসা বৃদ্ধ রোগী মহাদেব দাস। তাঁর ছেলে বললেন, ‘‘মেডিক্যালে যে রোগী ভর্তি বন্ধ, শ্রীরামপুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কি তা জানতেন না?’’ কোনও সুরাহা না হওয়ায় বাবাকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে চলে যান ছেলে।
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ২১০০ শয্যার করোনা হাসপাতালের পরিকল্পনাকে সামনে রেখে কাজ চলছে। সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়ের রূপান্তর হল সেই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, পাঁচ নম্বর গেট দিয়ে সম্ভাব্য করোনা-রোগীদের হাসপাতালে আনা হবে। এসএসবি ওপিডি ক্লিনিকের চাতালে থাকবে তথ্যকেন্দ্র। এর পরে স্ক্রিনিং করে রোগীদের ভিতরে ঢোকানো হবে। ইমার্জেন্সি রোগীরা কোথায় যাবেন, স্ক্রিনিংয়ের পদ্ধতি কী হবে, এ সব নিয়ে যাঁরা করোনা চিকিৎসকের দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরা আলোচনা করেন।
সেই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল এসএসবি বিল্ডিংয়ে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তা। ওই ভবনের নয় ও দশতলায় আইসোলেশন ওয়ার্ডের আদর্শ পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু ভবনটি কেন্দ্রীয় ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় অন্য তলাগুলিতেও জীবাণুযুক্ত বাতাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ অবশ্য আশাবাদী। ওই ভবনে ২৪টি সিসিইউ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী গ্রিন বিল্ডিং ও এমসিএইচ বিল্ডিংকেও করোনা হাসপাতালে রূপান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।
উপাধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘রোগীরা যাতে উন্নত মানের চিকিৎসা পান, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।’’