Coronavirus

স্যানিটাইজ়ার তৈরি করছে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মৌলানা আজাদ কলেজের পাশাপাশি রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও তৈরি করছে স্যানিটাইজ়ার।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৪:০৬
Share:

মৌলানা আজাদ কলেজে তৈরি হওয়া স্যানিটাইজ়ার দেখাচ্ছেন অধ্যক্ষ। নিজস্ব চিত্র

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে বিশেষজ্ঞেরা বারবার স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে বলছেন। কিন্তু এই আতঙ্কের আবহে বাজার থেকে স্যানিটাইজ়ারই উধাও। পাড়ার দোকান থেকে চাঁদনি, বড়বাজারের পাইকারি বিক্রেতা— সকলেই মুখের উপরে জানিয়ে দিচ্ছেন, স্যানিটাইজ়ার নেই। কেউ কেউ দোকানে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন, ‘স্যানিটাইজ়ার নেই’। এই পরিস্থিতিতে কলেজের সকলের ব্যবহারের জন্য মৌলানা আজাদ কলেজের রসায়ন বিভাগের তিন শিক্ষক বানিয়েছেন স্যানিটাইজ়ার। একই জিনিস তৈরি করছে রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও (ম্যাকাউট)।

Advertisement

মৌলানা আজাদ কলেজে স্যানিটাইজ়ার ইথাইল বানানো হচ্ছে ইথাইল অ্যালকোহল (৭০ শতাংশ), সংক্রামক শক্তিনাশক গ্লিসারিন ও সুগন্ধি দিয়ে। বানাচ্ছেন রসায়নের শিক্ষক শুভদীপ সামন্ত, প্রবীরকুমার দাস ও অম্বরীশ রায়। শুভদীপবাবু জানান, বিষয়টি প্রথম মাথায় আসে কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস দত্তের। অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘কোনও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়। কলেজের ছাত্র ও অন্যদের যাতে কাজে লাগে, সেই জন্যই স্যানিটাইজ়ার তৈরি করা হয়েছে।’’ কলেজ এটি তৈরি করছে জেনে অনেকেই চাইছেন। বিকাশ ভবনে এক বাক্স পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশের কয়েক জন অন্য দরকারে কলেজে এসেছিলেন, তাঁদেরও দেওয়া হয়েছে।

অধ্যক্ষ জানান, প্রথমে ভ্যানিলা সুগন্ধি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটা অনেকের পছন্দ নয়। তাই পরে দেওয়া হয়েছে সিট্রোনেলার গন্ধ। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন হতেই হবে। কলেজে এখন ছুটি। কিন্তু যাঁরা আসছেন, তাঁদের যে-কোনও বিভাগে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে বলা হচ্ছে।’’ করোনা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রচারপত্র তৈরি করা হয়েছে। কলেজের আশপাশে সাধারণের মধ্যে তা বিলি করা হচ্ছে।

Advertisement

মৌলানা আজাদ কলেজের পাশাপাশি রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও তৈরি করছে স্যানিটাইজ়ার। বাজারে স্যানিটাইজ়ারের আকাল হলেও সাময়িক ভাবে তাঁদের প্রতিষ্ঠান যাতে কিছুটা সামাল দিতে পারে, তাই উপাচার্য সৈকত মিত্র নিজে উদ্যোগী হয়েছেন এ বিষয়ে। তিনি জানালেন, প্রাথমিক ভাবে ম্যাকাউটের কর্মীদের স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হচ্ছে। শীঘ্রই সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে তা দেওয়া হবে। উপাচার্য বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হরিণঘাটা ক্যাম্পাসে জরুরি ভিত্তিতে এই স্যানিটাইজ়ার তৈরি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যাতে এটি সব সময়ে হাতের কাছে পান, সেই চেষ্টা আমরা করছি।’’

ইতিমধ্যেই কর্মীদের মাস্ক দিয়েছে ম্যাকাউট। পাশাপাশি চলছে সচেতনতার প্রচার।

তবে কলকাতা বা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনও স্যানিটাইজার তৈরির পরিকল্পনা নেই। এ কথা জানিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের বিভাগীয় প্রধান ছন্দা মুখোপাধ্যায় এবং প্রেসিডেন্সির রসায়ন বিভাগের প্রধান গান্ধী কর। ভেষজ আবির তৈরি করে খ্যাতি পেয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, ওই বিভাগ ও রসায়ন বিভাগে স্যানিটাইজ়ার তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও ছুটি পড়ে যাওয়ায় আপাতত তা বাতিল করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement