coronavirus

রেলযাত্রীরা বিপাকে, ত্রাতা হল সরকারি বাস

রবিবার সকাল থেকে রাজ্যে চালু হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। বন্ধ যাবতীয় গণপরিবহণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ০৫:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাওড়া থেকে কলকাতা বিমানবন্দর যেতে ভাড়া চাওয়া হল সাড়ে চার হাজার টাকা, গড়িয়া যেতে পাঁচ হাজার। শুধু তা-ই নয়, হাওড়া থেকে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ যেতে গুনতে হল দু’হাজার টাকা।

Advertisement

রবিবার সকাল থেকে রাজ্যে চালু হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। বন্ধ যাবতীয় গণপরিবহণ। আর তারই সুযোগে হাওড়া স্টেশনে নেমে যানবাহন না পেয়ে বিপাকে পড়া রেলযাত্রীদের থেকে এ ভাবেই ভাড়া হাঁকলেন স্টেশন চত্বরে থাকা গাড়ির চালকেরা। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা বাধ্য হয়ে সেই টাকা দিয়েই গন্তব্যে রওনা হলেন। যাঁরা পারলেন না, তাঁরা ট্রলি ব্যাগ টানতে টানতে হেঁটে রওনা দিলেন হাওড়া সেতু পেরিয়ে কলকাতার দিকে।

এ দিন ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত হাওড়া স্টেশনের পুরনো ও নতুন কমপ্লেক্স মিলিয়ে ১৮টিরও বেশি স্পেশ্যাল ট্রেন ঢোকে। সেগুলির যাত্রীদের বেশির ভাগই ছিলেন হায়দরাবাদ, চেন্নাই, বিহার থেকে আসা শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবার। সকাল থেকে স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি, প্রি-পেড ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাবের দেখা মেলেনি। ফলে স্টেশনের বাইরে এসে গাড়ি না পেয়ে বিপাকে পড়েন শয়ে শয়ে যাত্রী।

Advertisement

স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে বিহারের সমস্তিপুর থেকে এ দিন হাওড়ায় এসে নেমেছিলেন লক্ষণ পাসোয়ান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ট্রেনে ওঠার পরেই খবর পাই, বাংলায় আবার লকডাউন হয়ে গিয়েছে। হাওড়ায় নেমে কোনও গাড়ি পাইনি। গড়িয়া যাওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা চাইলেন এক জন। অত টাকা আমরা দেব কোথা থেকে?’’ একই অবস্থা চেন্নাই থেকে আসা রামলাল যাদব ও তাঁর বন্ধু দেওধর পাণ্ডের। চেন্নাইয়ে একটি জাহাজ মেরামতির কারখানায় কাজ করেন তাঁরা। শিশু সন্তানদের নিয়ে এসে এ দিন চরম হয়রানির মুখে পড়েন। রামলাল জানান, মধ্যমগ্রাম যেতে ইচ্ছেমতো ভাড়া চাইছেন গাড়ির চালক। উপায়ান্তর না দেখে স্টেশনের বাইরে প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথের সামনে বসে সরকারি বাসের জন্য অপেক্ষা করেছেন তিনি।

এ দিন সকাল থেকে সময় যত গড়িয়েছে, একের পর এক ট্রেন আসায় বেড়েছে স্টেশনের বাইরে যানবাহনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীর সংখ্যা। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে শেষে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন হাওড়া স্টেশন ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশ আধিকারিকেরা। এর পরেই হাওড়া সিটি পুলিশ ও রাজ্য পরিবহণ নিগমের উদ্যোগে ১২টি বাস হাওড়া স্টেশনে দেওয়া হয়। রেলযাত্রীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করার কথা মাইকে ঘোষণা করে পুলিশ। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন যাত্রীরা।

অন্য দিকে, এ দিন সকাল থেকে হাওড়া শহরের বাজারগুলিতে উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়লেও সকাল ১০টার পরেই তা ফাঁকা হয়ে যায়। হাওড়া ময়দান, মল্লিকফটক, সালকিয়া চৌরাস্তা, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে-সহ বিভিন্ন জায়গায় গার্ড রেল দিয়ে রাস্তা আটকে দেয় পুলিশ। শহরের প্রবেশপথ হাওড়া সেতু এবং বিদ্যাসাগর সেতুতে হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে শুরু হয় নাকা তল্লাশি। যাঁরা জরুরি কারণে বেরিয়েছিলেন, তাঁদের বৈধ কাগজ দেখাতে হয়। শহরের বিভিন্ন বড় বাজারগুলিতে চলেছে পুলিশি নজরদারি। সালকিয়ার হরগঞ্জ বাজারে ১০টার পরে যে সব দোকান খোলা ছিল, সেগুলি বন্ধ করে দেয় মালিপাঁচঘরা থানার পুলিশ। নিয়ম ভাঙার অভিযোগে গ্রেফতার হয় ২৯ জন।

হাওড়ার পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, ‘‘প্রতিদিন নাকা তল্লাশি চলবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনও গাড়ি বেরোতে পারবে না। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে দোকানপাট চালু রাখতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement