অনুজ শর্মা
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাহিনীর একাধিক সদস্য। সেই তালিকায় রয়েছে বন্দর এলাকার গার্ডেনরিচ থানার এক আধিকারিকের নামও। এই পরিস্থিতিতে বাহিনীর মনোবল বাড়াতে শনিবার গার্ডেনরিচ থানায় হাজির হলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। সেখানে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। একই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাহিনীকে কী কী করতে হবে, তা-ও ব্যাখ্যা করে বোঝান সিপি। পরে তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা যে যে প্রোটোকল মানতে বলেছেন, তা-ই মেনে চলতে বলা হয়েছে। থানার সকলের সঙ্গেই কথা বলেছি।’’ এ দিন রাতে ওই অফিসারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে খোঁজ নেন সিপি।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ওই অফিসারের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে জানা যায়, রিপোর্ট পজ়িটিভ। ওই রাতেই এম আর বাঙুর থেকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। ওসি-র দেহরক্ষী ও গাড়ির চালককে ডোমজুড়ের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে শুক্রবার রাতেই।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে লালবাজার থেকে সোজা গার্ডেনরিচ থানায় যান সিপি। সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি যান গার্ডেনরিচ কাচ্চি সড়ক মোড়ে। যাওয়ার পথে গার্ডেনরিচের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। পরে কাচ্চি সড়ক মোড়ে সাধারণ মানুষের হাতে মাস্ক তুলে দেন কমিশনার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তারা।
আরও পড়ুন: বাসিন্দাদের পাশে থাকতে ফোনে গ্রুপ পুলিশের
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের নিরিখে শহরের বেশির ভাগ এলাকাই ‘স্পর্শকাতর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে লকডাউন বলবৎ করতে রাত-দিন কাজ করছে পুলিশ। এর মধ্যেই বাহিনীর সদস্যেরা আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। এর জেরে মনোবলে যাতে ধাক্কা না লাগে, তা নিশ্চিত করতেই কমিশনার নিজে থানায় উপস্থিত হয়েছিলেন। পুলিশকর্মীরা ভাল কাজ করছেন বলে তিনি প্রশংসাও করেছেন। সূত্রের খবর, কমিশনার বাহিনীর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে পুলিশকর্মীরা সদস্যেরা যাতে নিজেদের সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতন থাকেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিনই গার্ডেনরিচ থানাকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ করা হয়েছে। ওই আধিকারিকের বাড়িতেও সেই কাজ হয়েছে। ওসি-র সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
লালবাজার জানিয়েছে, লকডাউন পুরোপুরি সফল করতে এ দিন কলকাতা পুলিশের ন’টি ডিভিশনেই কমব্যাট ফোর্সের অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ডিভিশনে সাত জন করে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীকে লাঠি হাতে পাঠানো হয়েছে লকডাউন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে পাঁচটি টাস্ক ফোর্স গড়ল পুরসভা