ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করেছে রাজ্য। বিধিনিষেধ জারি হয়েছে একাধিক ক্ষেত্রে। আপৎকালীন প্রয়োজন ছাড়া রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সাধারণের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রবিবার থেকেই চালু হয়ে গিয়েছে এই সব ব্যবস্থা। সেই নিয়ম অমান্য করে কেউ যাতে বিনা কারণে রাস্তায় না বেরোন, তার জন্য দিনের বেলায় বিভিন্ন জায়গায় নাকা তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু রাতে ট্র্যাফিক পুলিশের উপস্থিতি কম। আর সেই সুযোগে বিধি অমান্য করে কেউ গাড়ি নিয়ে বেরোলে তার ছবি তুলে চালককে এসএমএস পাঠিয়ে কারণ জানতে চাইবে পুলিশ। ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হলে গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারের ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে গাড়িচালকের মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হবে। কেন ওই চালক বিধি অমান্য করে রাতে বেরিয়েছিলেন, তার কারণ জানতে চাওয়া হবে সেখানে। ইমেল মারফত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়িচালক বা মালিককে উত্তর পাঠাতে হবে ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে। যা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন আধিকারিকেরা।
সূত্রের খবর, রবিবার রাত থেকেই এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য সব ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। মূলত রাতে কেউ গাড়ি নিয়ে বেরোলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির নম্বর নোট করতে বলা হয়েছে পুলিশকে। এ ছাড়া, কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংযোগস্থলে সিগন্যালে দাঁড়ানো গাড়ির ছবিও তুলে রাখতে বলা হয়েছে। পরে সেই গাড়ির নম্বর, সময় এবং স্থান উল্লেখ করে লালবাজারের ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দেবেন কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। যা দেখে ওই এসএমএস পাঠানো হবে।
সংক্রমণ ঠেকাতে নিয়ন্ত্রণ কঠোর হতেই শহরের প্রায় ২৮টি জায়গায় শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি। দিনের বেলায় পথে বেরোনো গাড়ি থামিয়ে নথিপত্র পরীক্ষা করছেন পুলিশকর্মীরা। উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে না পারলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও বিপর্যয় মোকাবিলা আইনেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, রাতে ট্র্যাফিক পুলিশের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। কোনও গাড়িচালক যাতে তার সুযোগ নিতে না পারেন, সে জন্য বিভিন্ন মোড়ের সিগন্যালে দাঁড়ানো গাড়ির ছবি তুলে রাখছেন পুলিশকর্মীরা। লালবাজার জানিয়েছে, রাত ন’টার পরে কোনও গাড়ি বেরোলে সেটিকে সরাসরি আটক না করে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে পুলিশকর্মীদের।
এমনিতে লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকে শহরের সর্বত্র সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হয়। রাতের শহরে বেরোনো গাড়ি সেই ক্যামেরায় ধরা পড়লে সেটিকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কন্ট্রোল রুম থেকেই আইনভঙ্গকারী চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসএমএস পাঠানো হবে তাঁকে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিনের বেলায় ব্যাঙ্ক, বাজার, গয়নার দোকান-সহ অনেক কিছুই খোলা থাকছে। যার জন্য দিনে ততটা কড়াকড়ি করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু রাতে জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ থাকছে সমস্ত কিছু। তাই তখনই এই ব্যবস্থা বেশি কার্যকর। ট্র্যাফিক পুলিশের একাধিক কর্তার দাবি, গত বছরও এই ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বিধিনিষেধ বলবৎ করা সফল হয়েছিল।