Coronavirus

আটকে পড়া যাত্রীদের নিয়ে শহরে ফিরল বিমান

এই যাত্রীদের ফেরানোর জন্য এ দিন সকাল সাড়ে ন’টায় কলকাতা থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার যে উড়ানটি যায়, তাতে ঢাকা গিয়েছেন ৩৩ জন ভারতীয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০২:৪৯
Share:

প্রত্যাবর্তন: ঢাকা থেকে বিশেষ বিমানে শহরে ফিরলেন যাত্রীরা। সোমবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। ছবি: সুমন বল্লভ

বিদেশে গিয়ে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের কেন ফিরিয়ে আনা হচ্ছে না, তা নিয়ে অভিযোগ ক্রমে বাড়ছিল। শেষমেশ তাঁদের ফেরাতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় সরকার। তার দ্বাদশ দিনে, সোমবার কলকাতায় নামল প্রথম উড়ান। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিশেষ উড়ানে এ দিন ঢাকা থেকে শহরে ফেরেন ১৬৯ জন। এখনও কলকাতায় আসার জন্য ঢাকায় অপেক্ষায় রয়েছেন আরও দেড় হাজার ভারতীয়। এ দিন শহরে নামা ১৬৯ জনকেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে।

Advertisement

এই যাত্রীদের ফেরানোর জন্য এ দিন সকাল সাড়ে ন’টায় কলকাতা থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার যে উড়ানটি যায়, তাতে ঢাকা গিয়েছেন ৩৩ জন ভারতীয়। ঢাকা থেকে বিমান কলকাতায় নামে বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে। তার আগে থেকেই বিমানবন্দরে সন্তানদের এক বার দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন বাবা-মায়েরা। সাঁতরাগাছির সমীর সাউ এসেছিলেন মেয়ে সঙ্গীতার জন্য। টাঙাইলের মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে পড়েন সঙ্গীতা। তাঁর সঙ্গী আরও পাঁচ জন ডাক্তারির ছাত্রীও এ দিন ফিরেছেন। তাঁদের এক জন, অঙ্কিতা দাসের বাবা নিরঞ্জন দাস এ দিন পুলিশকে অনুরোধ করেন, ‘‘মেয়ের কাছে তো বাংলাদেশের সিম কার্ড রয়েছে। কলকাতার যে সিম ছিল, সেটি অব্যবহারে অকেজো হয়ে গিয়েছে। এখন তো আবার ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। তাই কলকাতার সিম কার্ড নিয়ে এসেছি। ওটা মেয়েকে দিলে আগামী দু’সপ্তাহ ওর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারব।’’ উল্টোডাঙার বাসিন্দা ভোলা দাস আবার জানালেন, নিজের শহরে ফিরতে পেরে ভাল তো লাগছেই, স্বস্তিও পেয়েছেন তিনি।

অপেক্ষমাণ বাবাদের তালিকায় ছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর ছেলে ঈশানদেব ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার একটি নামী হোটেলে উচ্চ পদে চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন। এ দিন বিমানবন্দরের বাইরে বসে শোভনদেববাবু বলেন, ‘‘গত দু’মাস ছেলে হোটেলে বন্দি ছিল। রাইস কুকার কিনে শুধু ভাত ফুটিয়ে খেয়েছে। দুশ্চিন্তা তো হওয়ারই কথা।’’

Advertisement

সাড়ে বারোটা নাগাদ কলকাতায় বিমান নামলেও সব যাত্রীকে বার করতে করতে বিকেল সাড়ে পাঁচটা বেজে যায়। তার আগে এক বার কেন্দ্র এবং এক বার রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তবে এ দিন কারও লালারসের নমুনা নেওয়া হয়নি বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর। যে ১৬৯ জন এসেছেন, তাঁদের মধ্যে ৭৩ জন পড়ুয়া, ১৬ জন প্রবীণ নাগরিক, ৪৫ জন পর্যটক, ১৮ জন চাকুরিজীবী, ১৬ জন অসুস্থ এবং এক জন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সবাইকে ১০টি বাসে করে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য। তালিকায় রাজ্যের নিজস্ব কোয়রান্টিন কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন হোটেল রয়েছে। সেখানে যাঁরা থাকবেন বলে জানিয়েছেন, তাঁদের নিজেদের খরচে থাকতে হবে।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতায় নামার আগে ৬০ জন যাত্রী জানিয়েছিলেন তাঁরা কোথায় থাকতে চান। বাকিদের কাছ থেকে তা জানতে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করতেই বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের ছাড়তে দেরি হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: অচেনা রমজানে চাহিদা সত্ত্বেও দুর্লভ হালিম

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন