Coronavirus

বাঁদর-হনুমানের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ দমদম-বারাসত

এমনিতেই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলায় বারাসত-টাকি রোডের দু’পাশে প্রায় সব ক’টি বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তার উপরে এখন লকডাউনে স্তব্ধ জনজীবন।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৩:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি

লকডাউনের দুপুরে খেয়েদেয়ে ঘুমোচ্ছিলেন সকলে। হঠাৎ ঘরে ধুপধাপ শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় তাঁরা দেখেন, ১০-১২টি হনুমানের একটি দল ঘর লন্ডভন্ড করে লুটপাট করছে। ফ্রিজ খুলে ভিতরে রাখা আলু-পনিরের তরকারি থেকে শুরু করে যা পাচ্ছে, গপাগপ সাবাড় করছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দমদম, বারাসত-টাকি রোড ও দেগঙ্গায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ওই হনুমানেরা। দোকান হোক বা গৃহস্থের বাড়ি— সর্বত্র ঢুকে পড়ছে তারা। ঘরে যা খাবার পাচ্ছে, খেয়ে ফেলছে। হনুমানের কামড়ে ইতিমধ্যে জখমও হয়েছেন বেশ কয়েক জন।

Advertisement

এমনিতেই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলায় বারাসত-টাকি রোডের দু’পাশে প্রায় সব ক’টি বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তার উপরে এখন লকডাউনে স্তব্ধ জনজীবন। এই পরিস্থিতিতে খাবার পাচ্ছে না রাস্তার কুকুর-বেড়ালরা। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল হনুমানও। বন দফতরের বারাসতের রেঞ্জ অফিসার সুকুমার দাস বলেন, ‘‘বাইরে খাবার না পেয়েই ঘরে ঢুকে লন্ডভন্ড করছে বন্যপ্রাণীরা।’’

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, হনুমানের পাশাপাশি ঘরে ঢুকছে বাঁদরও। অবস্থা এমনই হয়েছে যে, আতঙ্কে লাঠি হাতে পালা করে পাহারায় বসছেন এলাকারই লোকজন। শনিবার সকালে বাড়ির সামনে বসে কাগজ পড়ছিলেন দেগঙ্গার দেবালয় ডাকঘরের এক কর্মী। সেই সময়ে একদল হনুমান পাশ দিয়ে যেতে যেতে আচমকা একটি দীপকের হাত কামড়ে ধরে। রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার শুরু করেন ওই ব্যক্তি। লকডাউনে দীপকের চিকিৎসা করতে গিয়ে নাজেহাল হয় পরিবার। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। সেখানেও ছোটাছুটি চলে কয়েক ঘণ্টা। শেষে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে দীপকের হাতে চারটি সেলাই করতে হয়।

Advertisement

এর আগে এক দিন দমদম স্টেশনের কাছে রাজাবাগান লেনে আলু-পেঁয়াজের দোকান খুলেছিলেন এক বিক্রেতা। হঠাৎ সেখানে হানা দেয় হনুমানের দল। তাদের তাড়ানোর চেষ্টা করেন উপস্থিত ক্রেতা এবং অন্য দোকানিরা। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই দলে ভারী হয়ে যায় হনুমানেরা। ভয়ে দোকান বন্ধ করে দেন ওই ব্যক্তি।

দেগঙ্গার চারাবাগানের বাসিন্দারা আবার জানান, তাঁদের এলাকায় বাঁদরের আতঙ্কে বাইরে বেরোনো যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই বাঁদরের হামলায় পাঁচ জন জখম হয়েছেন। রেঞ্জ অফিসার সুকুমারবাবু আশ্বাস দিয়েছেন, ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠা বাঁদর এবং হনুমানদের ধরার ব্যবস্থা করা হবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন