প্রতীকী ছবি।
ফের ওষুধের কালোবাজারির অভিযোগ উঠল শহরে। এ বারও অভিযোগ পাওয়ার পরেই তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার। বুধবার রাতে তাদের ধরে ফেলেন লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দারা। এর আগে গত মাসের শেষ দিকে এই অভিযোগে পার্ক স্ট্রিট
থেকে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
লালবাজার জানিয়েছে, বুধবার রাতে যারা ধরা পড়েছে, তাদের নাম রাজকুমার রায়চৌধুরী, দেবব্রত সাউ ও ইন্দ্রজিৎ হাজরা। রাজকুমারের বাড়ি কসবায়। দেবব্রত থাকে হেস্টিংসে। আর ইন্দ্রজিতের বাড়ি নিউ আলিপুরে। ধৃতদের কাছ থেকে ১৩২ ভায়াল রেমডেসিভির পাওয়া গিয়েছে, যা করোনার মোকাবিলায় ব্যবহার করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, গড়িয়াহাটের বাসিন্দা শঙ্কর সিংহ নামে এক ব্যক্তি তাদের জানিয়েছেন, রেমডেসিভিরের দাম ২৭০০ টাকা প্রতি ভায়াল। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। তদন্তে নেমে গুন্ডা দমন শাখার অফিসারেরা একবালপুর থানা এলাকার ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি ওষুধের দোকানের সামনে উপস্থিত হন। সেখানে অভিযোগকারীকেও আসতে বলা হয়। অভিযুক্ত রাজকুমার এবং ইন্দ্রজিৎ অভিযোগকারীকে ওই রেমডেসিভির ২৫ হাজার টাকায় বিক্রির চেষ্টা করতে গেলে তদন্তকারীরা তাদের ধরে ফেলেন। ওই দু’জনের কাছ থেকে উদ্ধার হয় রেমডেসিভিরের ১২টি ভায়াল।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করে দেবব্রতের সন্ধান মেলে। তার হেস্টিংসের বাড়িতে হানা দিয়ে রেমডেসিভিরের আরও ১২০টি ভায়াল উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। যা চড়া দামে বিক্রির জন্য মজুত করেছিল অভিযুক্তেরা।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ যা জানতে পেরেছে, তার ভিত্তিতে তদন্তকারীদের অনুমান, শহরের বুকে করোনার জরুরি ওষুধ রেমডেসিভিরের এই কালোবাজারির নেপথ্যে রয়েছে একটি প্রতারণা-চক্র। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ওষুধের দোকানে ঘুরে ঘুরে করোনায়
আক্রান্তদের নিজেদের ফাঁদে ফেলে ওই ওষুধ চড়া দামে বিক্রি করছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, বর্তমানে মানুষের অসহায়তার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কলকাতায় বেশ কয়েক জন অসাধু ব্যবসায়ী কয়েক গুণ বেশি দামে করোনার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রি করছে। কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের কালোবাজারি করার অভিযোগে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে। ওষুধের কালোবাজারির অভিযোগেও ধরপাকড় চলছে। তা সত্ত্বেও করোনার ওষুধ এবং বিভিন্ন রকম প্রয়োজনীয় সামগ্রীর কালোবাজারি করে চলেছে ওই চক্রটি। আপাতত যেনতেন প্রকারে তাদের ধরাটাই লক্ষ্য পুলিশের।
ধৃতদের এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হলে সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী হাসপাতাল ছাড়া কোনও দোকানে বিক্রি করা যাবে না রেমডেসিভির। পরে বিচারক ধৃতদের ১৮ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন।