জমি দখলের ‘চেষ্টা’ পুরপিতার

পুলিশ সূত্রের খবর, আয়রন গেট রোডে আসিফের একটি স্কুল রয়েছে। ওই স্কুলটি তিনি ৩৫ বছর ধরে চালাচ্ছেন। আসিফ জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি ওই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৪
Share:

বন্দর এলাকায় ছ’কাঠা জমি জোর করে লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্থানীয় কাউন্সিলর শামস ইকবালের বিরুদ্ধে। ডিসি (বন্দর)-র কাছে শনিবার এই অভিযোগ জানিয়েছেন ওয়াজিদ আলি শাহের বংশধর আসিফ আলি মির্জা। আরও অভিযোগ, জমি লিখে না দেওয়ায় ৬৭ বছরের বৃদ্ধ ও তাঁর স্ত্রীকে রাস্তার মাঝখানেই ধাক্কা মারা হয়।

Advertisement

আসিফের মেয়ে জামান মির্জা ও ছেলে তারিক মির্জা জানান, গার্ডেনরিচ থানা এলাকায় আয়রন গেট রোডে তাঁদের পরিবারের পাঁচ বিঘার একটি সম্পত্তি রয়েছে। ওই সম্পত্তি ওয়াকফ অনুমোদিত এবং জমি নিয়ে শরিকি মামলাও চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানি ধার্য হয়েছে আগামী কাল, সোমবার।

পুলিশ সূত্রের খবর, আয়রন গেট রোডে আসিফের একটি স্কুল রয়েছে। ওই স্কুলটি তিনি ৩৫ বছর ধরে চালাচ্ছেন। আসিফ জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি ওই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামস ইকবাল একদল লোক নিয়ে তাঁকে ঘিরে ধরেন। কাউন্সিলর আসিফকে জানান, ওই পাঁচ বিঘা জমির একাংশ (ছ’কাঠা) তাঁরা কিনে নিয়েছেন। সেই জমিতে থাকা নির্মাণ ভেঙে তাঁরা নতুন নির্মাণ করতে চান। আসিফ ওই সম্পত্তির মোতোয়ালি (দেখভালকারী)। তিনি যেন শামসকে লিখে দেন যে, ওই পাঁচ কাঠা জমি তাঁরা কিনেছেন। আসিফ তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। স্বামীকে উদ্ধার করতে এসে তাঁর স্ত্রী সাহানা আসিফও ওই দলের হাতে নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ।

Advertisement

আসিফের মেয়ে জানান, বাবাকে ঘিরে রাখা হয়েছে জেনে তিনি গার্ডেনরিচ থানায় যান। সেখানকার পুলিশ তাঁকে বলে অভিযোগ লিখিত আকারে দিতে। অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জেনে থানার পুলিশ জামানকে জানিয়ে দেয়, যে অফিসার জেনারেল ডায়েরি নেবেন, তিনি অনুপস্থিত। ওই তরুণী আরও জানান, সাদা পোশাকের কয়েক জন পুলিশকর্মী তাঁর বাবা ও মাকে উদ্ধার করে তাঁদের স্কুলে নিয়ে যান। সেখানে বেশ কয়েক জন অভিভাবক হাজির ছিলেন। তাঁরাই ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়ি ফিরিয়ে দেন। গার্ডেনরিচ থানা অভিযোগ না নেওয়ায় শনিবার দুপুরে ডিসি (বন্দর)-র অফিসে যান আসিফ। সেই সময়ে ডিসি সৈয়দ ওয়াকার রেজা হাজির ছিলেন না। তিনি তাঁর অভিযোগ ওই অফিসে জমা দিয়ে এসেছেন।

মারধর ও ধাক্কাধাক্কির সব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর শামস ইকবাল। শনিবার তিনি পাল্টা দাবি করে বলেন, আসিফ আয়রন গেট রোডে যে স্কুল চালান, সেটি সরকার অনুমোদিত নয়। অথচ, সেখানে কয়েকশো শিশু পড়াশোনা করে। তাঁর দাবি, ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা তাঁর কাছে স্কুলের ভগ্নদশা নিয়ে একাধিক বার অভিযোগ জানানোয় শুক্রবার গার্ডেনরিচ থানার ওসি ও আসিফকে সঙ্গে নিয়ে তিনি স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে কয়েক জন অভিভাবক আসিফকে ঘিরে স্কুলের দশা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। জমি লিখিয়ে নিতে চাওয়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, জামান মির্জার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন