একটি বাড়ির তিনতলার ঘরে আগুন লেগে মৃত্যু হল এক দম্পতির। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সালকিয়া এলাকার ত্রিপুরা রায় লেনে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শঙ্কর দাস (৩০) এবং অর্পিতা দাস (২৬)। এ দিন সকালে দমকল ও পুলিশ বাহিনী ওই বাড়ির দরজা ভেঙে তাঁদের দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ৪৪ নম্বর ত্রিপুরা রায় লেনে তিনতলা ওই বাড়ির উপরের তলায় থাকতেন ওই দম্পতি। বছর দেড়েক আগে বিয়ে হয় তাঁদের। ওই বাড়িরই দোতলায় থাকেন শঙ্করবাবুর বাবা-মা। পুলিশ জানায়, প্লাস্টিকের জিনিস তৈরির ব্যবসা রয়েছে ওই পরিবারের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ওই বাড়ি থেকে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় প্রতিবেশীদের। বাইরে বেরিয়ে তাঁরা দেখেন, তিনতলায় শঙ্করবাবুরা যে ঘরে থাকেন সেখানে ও সামনের লাগোয়া বৈঠকখানায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। প্রাথমিক ভাবে এলাকার লোকজনই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর দেওয়া হয় দমকল ও পুলিশে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন
ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই দম্পতির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাওড়া মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এক প্রতিবেশী রমেশ সাঁতরা বলেন, ‘‘আমার ঘরের উল্টেদিকেই শঙ্করের ঘর। একটি জোরালো শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরে বাইরে বেরিয়ে দেখি ওর ঘর দাউদাউ করে জ্বলছে। আমরা সকলে চিৎকার করে ডাকাডাকি করতে থাকি। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। এর পরে আমরাই ওই বাড়ির তিনতলায় যাই। তবে আগুনের তেজে এগোতে পারিনি।’’ এই দৃশ্য দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন শঙ্করবাবুর বাবা-মা মানিক দাস ও জবা দাস। এলাকার লোকজনই তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান।
এ দিন সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শঙ্করবাবুর ঘর লাগোয়া বৈঠকখানার সমস্ত আসবাব ও অন্যান্য জিনিস পুড়ে গিয়েছে। আগুনের তাপে গলে গিয়েছে পাখার ব্লেডগুলিও। তবে শঙ্করবাবু যে ঘরে শুয়েছিলেন সেটি অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিগ্রস্ত। খাট, আলমারি ও জামাকাপড় অক্ষত রয়েছে। তবে ঘরের এসি মেশিন সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে।
দমকলের ধারণা, প্রথমে আগুন লেগেছিল সামনের ঘরে। পরে শর্ট সার্কিটের জন্য এসি মেশিনে বিস্ফোরণ হয়। সেই শব্দই পেয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। তবে ঠিক কী কারণে আগুন লাগে, তা এখনও পরিষ্কার হয়নি। তদন্তের জন্য খবর দেওয়া হয়েছে ফরেনন্সিক বিশেষজ্ঞদেরও।