আহত সুশান্ত সাধুখাঁ
মোটরবাইক থামিয়ে দোকান থেকে কেনাকাটা করছিলেন এক দম্পতি। দোকানের কাছেই দাঁড়িয়েছিল দু’জন যুবক। কেনাকাটা চলাকালীন তারা ওই মহিলাকে কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। মহিলার স্বামী প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কোনওমতে জিনিসপত্র কিনে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যান ওই দম্পতি।
মহিলার আরও অভিযোগ, তাঁরা বাড়ির কাছাকাছি আসতেই জনা ১৫ যুবক ঘিরে ধরে। তার পরে মোটরবাইক থেকে তাঁর স্বামীকে টেনে নামিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে। মহিলা বাঁচাতে গেলে ওই যুবকেরা তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। মহিলার ভাসুর তাঁদের বাঁচাতে এলে তাঁকেও বেধড়র মারধর করা হয়। শেষে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে পালায় ওই যুবকেরা। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে তাঁদের সিটি স্ক্যান, বুক এবং কানের এক্স-রে করা হয়। এ দিন রাতে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ওই দম্পতিকে।
রবিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দমদমের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগরে। রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই দম্পতি সুশান্ত সাধুখাঁ ও তাঁর স্ত্রী পায়েল। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও কাউকে গ্রেফতার করা তো দূর, আটক পর্যন্ত করেনি পুলিশ। সুশান্ত জানিয়েছেন, তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।
পায়েল জানিয়েছেন, রবিবার বিকেলে তাঁরা অজয়নগর থেকে শূরের মাঠের মধ্যে একটি মুদিখানার দোকান থেকে কিছু জিনিস কিনছিলেন। তখনই ওই ঘটনা। প্রথমে ওই দম্পতি ভেবেছিলেন, বিষয়টি সেখানেই থেমে যাবে। কিন্তু তা যে বাড়ি পর্যন্ত গড়াবে, সেটা সম্ভবত তাঁরা আঁচ করতে পারেননি। পায়েলের অভিযোগ, বাড়ির কাছাকাছি আসতেই একটি অটো এবং কয়েকটি মোটরবাইকে চেপে হাজির হয় ওই দুই যুবকের সঙ্গীরা। এর পরেই তারা চড়াও হয় সুশান্তর উপরে।
সুশান্ত জানিয়েছেন, বাইক থেকে নামিয়ে এক জন তাঁর গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে, বাকিরা লোহার রড দিয়ে মারধর শুরু করে। সুশান্তর অভিযোগ, এক যুবক রিভলভারের বাট দিয়েও তাঁকে মেরেছে। গোলমাল শুনে সুশান্তর দাদা নিতাই বাঁচাতে এলে তাঁর গলায় থাকা সোনার চেনও ছিনতাই করে অভিযুক্ত যুবকেরা।
কিন্তু শুধু কি কটূক্তির কারণেই ওই দম্পতির উপরে এমন হামলা?
পায়েল জানান, ২০১৪-তে তিনি এবং সুশান্ত মতিঝিল কলেজে পড়তেন। সেখানে এক ছাত্রনেতার সঙ্গে এক বার তাঁরা ঝামেলায় জড়ান। পায়েল বলেন, ‘‘এটা সেই ঘটনারই রেশ কি না, জানি না।
তখনও থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। এ দিনের ঘটনার পরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।’’
তবে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।