বধূকে মানসিক নির্যাতনের মাসুল ১০ লক্ষ, নির্দেশ আদালতের

খোরপোষ দিতেই হবে। পাশাপাশি, স্ত্রীর উপরে হওয়া মানসিক নির্যাতনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে আরও দশ লক্ষ টাকা। এমনই নির্দেশ আদালতের। 

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৪
Share:

খোরপোষ দিতেই হবে। পাশাপাশি, স্ত্রীর উপরে হওয়া মানসিক নির্যাতনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে আরও দশ লক্ষ টাকা। এমনই নির্দেশ আদালতের।

Advertisement

গত সপ্তাহে গার্হস্থ্য হিংসা প্রতিরোধ আইনের একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে আলিপুর অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতের বিচারক শুভাশিস ঘোষাল ওই ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন। রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার বাসিন্দা সায়নী শীল তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ওই আইনে মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলা শুনানি শেষে গত বুধবার বিচারক আবেদনকারীর স্বামী অভিষেক শীলকে এক মাসের মধ্যে ওই টাকা দিতে নির্দেশ দেন। আবদেনকারী গৃহবধূ সায়নী শীলের কৌঁসুলি স্নেহা রায় এবং শুভময় সমাদ্দার জানান, বিচারক তাঁর রায়ে ওই ক্ষতিপূরণের সঙ্গেই মাসিক ১৫ হাজার টাকা দিতে বলেছেন থাকার ব্যবস্থা বাবদ। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা খোরপোষ বাবদ দিতে বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুই কৌঁসুলি। তাঁর দাবি, আদালত আগে খোরপোষের নির্দেশ দিলেও মানসিক অত্যাচারের জন্য ক্ষতিপূরণের নির্দেশ বিরলতম। অভিষেকের আইনজীবী সোমনাথ দে জানিয়েছেন, নিম্ন আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁদের তরফে উচ্চতর আদালতে আবেদন করা হবে।

২০০৯ সালের জুন মাসে বরাহনগরের বাসিন্দা অভিষেকের সঙ্গে বিয়ে হয় অভিযোগকারী সায়নীর। আবদনে তাঁর অভিযোগ ছিল, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির তরফে তাঁর উপরে মানসিক অত্যাচার করা হত। কথায় কথায় বলা হত, বিয়েতে দেওয়া জিনিসপত্র ভাল নয়। একই সঙ্গে পণ হিসেবে আরও জিনিস চেয়ে শ্বশুরবাড়ির তরফে তাঁর উপরে চাপ দেওয়া হত বলেও অভিযোগ। আদালত সূত্রের খবর, অভিযোগকারী পরিবারের তরফে মেয়ের দাম্পত্য জীবনের কথা ভেবে বেশ কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু এর পরেও একই জিনিস চলতে থাকায় অভিযোগকারী নিজের বাড়িতে ফিরে যান এবং মামলা দায়ের করেন ২০১০ সালে। আদালত সূত্রের দাবি, অভিযোগকারীর স্বামীর তরফে সব দাবি অস্বীকার করা হয়। তাঁদের পক্ষ থেকে অভিযোগকারীর আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।

Advertisement

আদালত সূত্রের খবর, ২০১০ সালে ষষ্ঠ জেলা আদালতের বিচারকের কাছে প্রথম আবদেন করা হয় অভিযোগকারী গৃহবধূর তরফে। সেই মামলায় বিচারক গত বছর মাসিক পনোরা হাজার টাকা খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দেন অভিযোগকারীর স্বামীকে। কিন্তু তাতে খুশি হননি ওই মহিলা। ফের আলিপুর অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতের বিচারকের কাছে নতুন করে আবেদন করেন সায়নী। প্রায় এক বছর বিচারপর্ব চালর পরে ১৭ এপ্রিল ওই রায় দেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন