আদিগঙ্গার দূষণ

ফের রিপোর্ট চাইল আদালত

পদের ফারাকে কি বদলে যেতে পারে নালার চরিত্র! মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কলকাতা পুরসভা বলছে, মহানগরের নালা বেয়ে আদিগঙ্গায় শুধুই বৃষ্টির জল পড়ে। কিন্তু পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হাতে থাকা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বক্তব্য, ওই নালা বেয়ে গঙ্গায় পড়ছে নিকাশি ও বর্জ্যও!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১০
Share:

পদের ফারাকে কি বদলে যেতে পারে নালার চরিত্র!

Advertisement

মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কলকাতা পুরসভা বলছে, মহানগরের নালা বেয়ে আদিগঙ্গায় শুধুই বৃষ্টির জল পড়ে। কিন্তু পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হাতে থাকা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বক্তব্য, ওই নালা বেয়ে গঙ্গায় পড়ছে নিকাশি ও বর্জ্যও! কলকাতা পুরসভা দাবি করেছে, আদিগঙ্গার দূষণ ঠেকাতে ২০টি নালার মুখ বন্ধ করেছে তারা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী বৃহস্পতিবার আদালতে জানান, ১৫টি নালার মুখ পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। বাকি পাঁচটি খোলা অথবা আংশিক খোলা রয়েছে।

রাজ্যের দুই সংস্থার দু’রকম বয়ানে এ দিন বিস্ময় প্রকাশ করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, পর্ষদকে ফের নালা পরিদর্শন করতে হবে। আদিগঙ্গার জলের মান পরীক্ষা করেও রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

Advertisement

আদিগঙ্গার দূষণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মামলা চলছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, মহানগরের বর্জ্য এবং অবৈধ খাটাল-খামার থেকে ঘটা দূষণের জেরে আদিগঙ্গার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে বিপন্ন। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর, আদিগঙ্গার জলের রং ভাটার সময়ে কালো হয়ে যায়। কোথাও কোথাও ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়ার মান পৌঁছে যায় প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ৫০ লক্ষের কাছাকাছি! আদিগঙ্গার এই ভয়ঙ্কর দূষণে ক্ষতি হচ্ছে গঙ্গারও।

এই পরিস্থিতিতে আদিগঙ্গার পরিবেশ রক্ষা করতে একাধিক নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু তার সব ক’টি অক্ষরে অক্ষরে পালন না করায় তিরস্কারও সইতে হয়েছে পুরসভা ও প্রশাসনকে। আদিগঙ্গার দূষণ ঠেকানো নিয়ে এর আগে নানা সময়ে পরিবেশ দফতর ও পুরসভার টানাপড়েনও হয়েছে। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে পরিস্থিতি অন্য মাত্রা পেয়েছে। বর্তমানে মেয়র ও পরিবেশমন্ত্রী দুই পদেই রয়েছেন শোভনবাবু। ফলে আদিগঙ্গাকে রক্ষা করা নিয়ে তাঁর দায়িত্ব আরও বেড়েছে। এ দিন এজলাসেও এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এই মামলার আদালতবান্ধব সুভাষ দত্ত-ও এজলাসে অভিযোগ করেন, পরিবেশমন্ত্রীই এখানে আদিগঙ্গার দূষণে দায়ী।

নালা নিয়ে সমস্যা হলেও খাটাল উচ্ছেদ নিয়ে পুরসভা এ দিন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালতে সময়সীমা নির্দিষ্ট করেছে। পুরসভার কৌঁসুলি গোপালচন্দ্র দাস এজলাসে জানান, খাটাল উচ্ছেদের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ৩ অক্টোবরের মধ্যে আদিগঙ্গার সব খাটাল তুলে দেওয়া হবে। আদালত সেই সময়সীমাকেই সিলমোহর দিয়েছে। উচ্ছেদের কাজে পুরসভাকে সব রকম সাহায্য করতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন