ফাইল চিত্র।
করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুললেন তাঁর পরিজনেরা। গত ১০ মে ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটার কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তপনকুমার ঘোষ (৬৪) নামে ওই ব্যক্তি। তপনবাবুর পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে তাঁকে অক্সিজেনের নল খুলে রাইলস টিউব পরানোর সময়ে বিপত্তি ঘটে। যার জেরে তিনি মারা যান। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধের মেয়ে মানসী ঘোষ। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পাটুলির ঘোষপাড়ার বাসিন্দা মানসী জানান, করোনা পজ়িটিভ হওয়ায় এবং একই সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় তিনি তাঁর বাবাকে গত ৫ মে চিংড়িঘাটার কাছে টেকনো ইন্ডিয়া ডামা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই হাসপাতালেই চাকরি করেন মানসী। তপনবাবুকে রাখা হয়েছিল আইসিইউয়ে। তাঁর অক্সিজেনও চলছিল। মানসী বলেন, “ঠিক মতো দেখাশোনা করার জন্যই বাবাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। কাজের ফাঁকে ফাঁকে বাবার খোঁজ নিতাম।’’ তাঁর দাবি, তপনবাবু চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন। এমনকি তিনি তাঁকে গলা ভাত, খিচুড়ি, ডালিয়া, চিকেন সুপও খাইয়েছিলেন। মানসী বলেন, “১০ তারিখ আমি বাবাকে দুপুরের খাবার খাওয়াই। বিকেলে সুজির হালুয়া দিই। রাতে বাড়ি ফিরে আসার কিছু ক্ষণ পরেই হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয়, বাবা গুরুতর অসুস্থ। হৃদ্্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছে দেখি, বাবাকে রাইলস টিউব পরানো হয়েছে। ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছে। তার কিছু সময় পরেই উনি মারা যান।’’
মানসীর প্রশ্ন, “বাবা স্বাভাবিক ভাবেই চার বেলা খাওয়াদাওয়া করছিলেন। হঠাৎ করে কী এমন হল যে, অক্সিজেন নল খুলে খাওয়ানোর জন্য রাইলস টিউব পরাতে হল? তা ছাড়া, বাড়ির লোকের অনুমতি ছাড়া কি রাইলস টিউব পরানো যায়?’’ তাঁর অভিযোগ, চিকিৎসক নন, হাসপাতালের কোনও কর্মী অনভিজ্ঞ হাতে তপনবাবুকে রাইলস টিউব পরাতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে টেকনো ইন্ডিয়া ডামা হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার প্রসেনজিৎ বর্ধন রায় বলেন, “ওই রোগী অসুস্থ হয়ে প্রথম কয়েক দিন বাড়িতে ছিলেন। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওঁকে এখানে ভর্তি করা হয়। যেমন যেমন চিকিৎসা প্রয়োজন, সব কিছুই করা হয়েছিল। যাবতীয় চেষ্টা সত্ত্বেও ওঁকে বাঁচানো যায়নি। ওই বৃদ্ধের মেয়ে আমাদের হাসপাতালেই কাজ করেন। আমরা তাঁর পাশে আছি।”