মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে কলেজ স্কোয়ারে তালা। ফাইল চিত্র
মিটিং-মিছিল বন্ধ করে কলেজ স্ট্রিটে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছিল জুনের গোড়ায়। সেই নির্দেশ দেওয়ার পাঁচ সপ্তাহ পরে কয়েকটি গণ সংগঠনের দাবি মেনে শুনানিতে বসতে রাজি হলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ওই ১৪টি গণ সংগঠনের অভিযোগ, পুলিশ কমিশনার শহরের একটি এলাকায় গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করতে যে ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন, তা বেআইনি। এ বিষয়ে সিপি-কে একটি চিঠিও দিয়েছে তারা।
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির সহ-সভাপতি রঞ্জিত শূরের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ কমিশনার একতরফা ভাবে কলেজ স্ট্রিটে ১৪৪ ধারা চাপিয়ে দিয়েছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ (৭) নম্বর ধারা অনুযায়ী, তাঁর সামনে আপত্তি পেশ করার সুযোগ পাওয়াটা আমাদের আইনি অধিকার। তা এত দিন দেওয়া হয়নি।’’ গণ সংগঠনগুলির তরফে গত ২০ জুন সিপি-কে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তার জবাবে ১১ জুলাই লেখা একট চিঠিতে সিপি আবেদনকারীদের শুনানিতে বসার সুযোগ দিতে রাজি হয়েছেন। আজ, শুক্রবার লালবাজারে সিপি-র সঙ্গে মুখোমুখি বসার কথা কলেজ স্ট্রিটে ১৪৪ ধারা আরোপের বিরোধী গণসংগঠন কর্মীদের।
লালবাজারের তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনারের এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের অধিকার রয়েছে। সেই অধিকারবলেই তিনি যা করার করেছেন। তা হলে শুনানিতে বসতে তিনি রাজি হলেন কেন?
পুলিশের বক্তব্য, এই শুনানি নিছকই আইনি একটি প্রক্রিয়া। এমনকী, সিপি কোনও আপত্তির লিখিত জবাবদিহি করতেও বাধ্য নন বলে তাঁদের দাবি। লালবাজার সূত্রের খবর, কলেজ স্ট্রিটে ১৪৪ ধারা জারি নিয়ে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতার কথা মাথায় রেখেই শুনানিতে রাজি হয়ে গিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। জুনের গোড়ায় তারকেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে শাসক দলের এক ছাত্রনেতা জানিয়েছিলেন, কলেজ স্কোয়ারের মিটিং-মিছিলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে পড়ুয়াদের অসুবিধা হচ্ছে। তাতেই তড়িঘড়ি মিটিং-মিছিল বন্ধ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ কমিশনারের তরফে কলেজ স্ট্রিটে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ৫ জুন থেকে ৩ অগস্ট অবধি দু’মাসের জন্য এই নির্দেশ জারি হয়েছে। সেই মেয়াদ পরে বাড়ানো হতে পারে। পুলিশি নির্দেশে কলেজ স্কোয়ার চত্বরে মিটিং-মিছিল বন্ধ করতে পড়ুয়াদের গণ-আবেদনের কথাও বলা হয়েছিল। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে গণ-আন্দোলনের কর্মীরা ইতিমধ্যেই বারংবার তথ্য জানার অধিকার প্রয়োগ করেছেন। তাঁরা জানতে চেয়েছেন, কারা কলেজ স্ট্রিটে মিটিং-মিছিল বন্ধ করতে গণ-স্বাক্ষর করেছিলেন?