৯০ কোটির ওষুধ গিলেছে বাগড়ি, সঙ্কট জেলায়

ক্যানিং স্ট্রিটের ওই ছ’তলা বাজার থেকে মূলত দক্ষিণবঙ্গের ১২-১৩টি জেলায় ওষুধ সরবরাহ হয়। মার্কেটের ওষুধের দোকান পুড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে প্রভাব পড়বে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক এবং প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১২
Share:

বাগড়ি মার্কেটে ওষুধের শতাধিক দোকান প্রায় পুরো বিধ্বস্ত। —নিজস্ব চিত্র।

দ্বিতীয় দিনেও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাগড়ি মার্কেটের আগুন। মার্কেটের সব তলায় রয়েছে ওষুধের দোকান। ওষুধের শতাধিক দোকান প্রায় পুরো বিধ্বস্ত। অন্য ৩০টি দোকান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে ওষুধের বাজারে টান তো পড়বেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দুই থেকে আড়াই মাস লাগতে পারে বলে মনে করছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৯০ কোটি টাকার ওষুধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

ক্যানিং স্ট্রিটের ওই ছ’তলা বাজার থেকে মূলত দক্ষিণবঙ্গের ১২-১৩টি জেলায় ওষুধ সরবরাহ হয়। মার্কেটের ওষুধের দোকান পুড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে প্রভাব পড়বে। ফলে শহরতলি ও গ্রামাঞ্চল অনেক বেশি ভোগান্তির শিকার হতে পারে বলে ওষুধ ব্যবসায়ীদের একাংশের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে বাগড়ি মার্কেটের উল্টো দিকে মেহতা বিল্ডিংয়ে সোমবার বিদ্যুৎ-সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়। বাগড়ির পোড়া বা আধাপোড়া সামগ্রীর ঠাঁই হয়েছে মেহতাতেই। সেখানেও রয়েছে বহু ওষুধের দোকান। মেহতা বিল্ডিং এ দিন বন্ধ ছিল। আপাতত ওষুধের বাজারের সমস্যা মোকাবিলার রাস্তা খুঁজে পাওয়া কঠিন বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাজার পরিষ্কার করতেই প্রায় ১৫ দিন লাগবে। নতুন আসবাবপত্র এবং ওষুধ এলে তবেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

ফার্মাসিউটিক্যাল ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার আ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের সম্পাদক জয়দীপ সরকার বলেন, ‘‘এখন আমাদের ওষুধ কোম্পানির উপরে নির্ভর করতে হবে। শুধু ওষুধ নয়, শুক্রবার থেকে কেনাবেচার নগদ অর্থও বিভিন্ন দোকানে রাখা ছিল। সব মিলিয়ে এক থেকে দেড়শো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পাঁচতলার একটি দোকানেই শুক্রবার কয়েক লক্ষ টাকা নগদ রাখা হয়েছিল। তা-ও নষ্ট হয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ধ্বংসস্তূপে খোঁজ সান্ত্বনার

সম্প্রতি কেরলের বন্যায় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। ডিস্ট্রিবিউটরদের ওষুধের দাম বাবদ পাওনা মেটানোর সময়সীমা শিথিল করেছিল তারা। প্রয়োজনে মেয়াদ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে তারা। সংগঠনের নেতাদের দাবি, ইতিমধ্যে কয়েকটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। আশ্বাসও মিলেছে।

সংগঠনের তরফে বিমা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু হতে চলেছে। অধিকাংশ দোকানেই ড্রাগ লাইসেন্স-সহ বিমার নথি রাখা ছিল। তা-ও পুড়ে গিয়েছে। সেই জন্য বিমা, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সাহায্য ছাড়া এই সঙ্কট থেকে বেরোনো কঠিন বলে মনে করছেন বাগড়ির ওষুধ ব্যবসায়ীরা।

‘‘খুচরো দোকান ও ছোট ডিস্ট্রিবিউটরদের মজুত থাকা ওষুধে কয়েক সপ্তাহ চলতে পারে। তার পরে পরিস্থিতি সামলানো মুশকিল হবে,’’ বলছেন সংগঠনের এক কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন