Kolkata Durga Puja 2023

উৎসবের শেষ রেশ চেটেপুটে নিতে দশমীতেও মণ্ডপমুখী জনতা

দশমীতেও মানুষের ঢল দেখা গেল একাধিক মণ্ডপে। কেউ সকাল সকাল পাড়ার মণ্ডপে সিঁদুর খেলে বেরিয়ে পড়লেন, কেউ আবার নবমীতে রাত জাগার ক্লান্তি কাটিয়ে নতুন উদ্যমে বেরোলেন দুপুরের পরে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:১১
Share:

রঙিন: সিঁদুরখেলায় মেতেছেন তরুণীরা। মঙ্গলবার, বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো প্রাঙ্গণে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

নতুন করে এক বছরের অপেক্ষা শুরুর আগে এ যেন যতটা সম্ভব উৎসবের আলো মেখে নেওয়ার প্রতিযোগিতা! বৃষ্টির বাধাও যা আটকাতে পারল না। দশমীতেও মানুষের ঢল দেখা গেল একাধিক মণ্ডপে। কেউ সকাল সকাল পাড়ার মণ্ডপে সিঁদুর খেলে বেরিয়ে পড়লেন, কেউ আবার নবমীতে রাত জাগার ক্লান্তি কাটিয়ে নতুন উদ্যমে বেরোলেন দুপুরের পরে। সকালের দিকে তেমন ভিড় দেখা না গেলেও দশমীর সন্ধ্যা পেরোতেই পরিচিত ভিড়ের ছবি দেখা গেল শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপে।

Advertisement

মঙ্গলবার, দশমীর সকাল থেকে গঙ্গার একাধিক ঘাটে বিসর্জন শুরু হয়েছিল। মূলত বাড়ির পুজোর সঙ্গে বেশ কয়েকটি বারোয়ারি পুজোর প্রতিমা এ দিন বিসর্জন দেওয়া হলেও বড় বাজেটের পুজোগুলির ক্ষেত্রে ছিল অন্য ছবি। রেড রোডের কার্নিভালে অংশ নিতে চলা প্রতিমার পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন বড় পুজোর উদ্যোক্তারা এ দিন প্রতিমা মণ্ডপে থাকছে বলে আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। যার ফলে প্রত্যাশা মতোই মানুষের ঢল দেখা গেল
দশমীর রাতেও। যদিও সকাল থেকে এ দিন শহরের ছবি ছিল অন্য দিনের থেকে আলাদা। শহরের রাস্তাঘাট ছিল কার্যত ফাঁকা। একাধিক পুজো মণ্ডপে চলছিল ঢাকের আওয়াজে প্রতিমা বরণের তোড়জোড়। সকাল থেকে গঙ্গার ঘাটেও বিসর্জনের ভিড় বাড়ছিল। যদিও বিকেলের পর থেকে পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়। ক্ষণিকের বৃষ্টিতেও ছাতা মাথায় একাধিক বড় বাজেটের পুজো মণ্ডপের সামনে জনতার ঢল নামার পাশাপাশি একই রকম পুলিশি ব্যস্ততার দেখা মেলে।

এ দিন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত যত বেড়েছে, ততই দীর্ঘ হয়েছে মণ্ডপে ঢোকার লাইন। দক্ষিণের একাধিক পুজো মণ্ডপের সামনে লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। চেতলা অগ্রণীর লাইনে দাঁড়ানো এক তরুণী বললেন, ‘‘ভাবলাম, দশমীতে একটু ফাঁকা হবে। তাড়াতাড়ি কয়েকটা ঠাকুর দেখতে পারব! কিন্তু কোথায় ফাঁকা, দেখে তো মনে হচ্ছে অষ্টমীর সন্ধ্যা।’’ সুরুচি সঙ্ঘের সামনে এ দিন দুপুরে ভিড় দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে আজ দশমী। লম্বা লাইনের পাশাপাশি পুলিশের বাঁশি, স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যস্ততা ছিল পুজোর আর চার দিনের মতোই। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কিংশুক মিত্র বললেন, ‘‘খাতায়কলমেই শুধু আজ দশমী। মণ্ডপের বাইরে লম্বা লাইন দেখে তা বোঝার উপায় নেই। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা মাথায় সকলে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। মানুষের মধ্যে সপ্তমীর সন্ধ্যার মতো উৎসাহ।’’ একই ছবি ছিল দক্ষিণের ত্রিধারা, কসবার একাধিক পুজো মণ্ডপ চত্বরেও।

Advertisement

ভিড় টানতে পিছিয়ে ছিল না উত্তরের একাধিক পুজোও। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার থেকে শুরু করে হাতিবাগান সর্বজনীন, টালা প্রত্যয়— দশমীতেও ভিড় টেনেছে। সন্ধ্যায় টালা প্রত্যয়ের লাইনে দাঁড়ানো সাম্য শূর বললেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে আমি ভেবেছিলাম, দশমীতে বোধ হয় শুধু আমারই উৎসাহ। কিন্তু এখন এখানে দেখছি, আমি লম্বা লাইনের একেবারে শেষে দাঁড়িয়ে। আগে জানলে সকাল সকাল আসতাম।’’ তবে এ দিন সকাল থেকে অন্য ছবি ছিল বাগবাজারে। সকাল থেকে সিঁদুর খেলার উৎসাহ দেখা গিয়েছে
সেখানে। পরিচিতদের সঙ্গে সিঁদুর খেলায় ব্যস্ত সোহিনী পাত্র বললেন, ‘‘এই পুজোয় সিঁদুর খেলার জন্যই প্রতি বছর মুখিয়ে থাকি। এটা না খেললে পুজো শেষ হয়েছে মনেই
হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন