Cycloen Amphan

ঝড়ের দাপটে বিপর্যস্ত সল্টলেক থেকে নিউ টাউন

বিদ্যুৎ না থাকায় জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। মোবাইল বা ফোন সংযোগ না থাকায় সমস্যা বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০২:০০
Share:

পথের পাশে একটি খাবারের স্টলের উপরে ভেঙে পড়েছে গাছ এবং ছাউনি। শুক্রবার, নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র

যত্রতত্র গাছ পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ। বিদ্যুৎ নেই। জল নেই। করোনা আতঙ্ক দূরে সরিয়ে নলকূপে মানুষের লাইন। মোবাইলের সংযোগ বা ইন্টারনেট সংযোগও মিলছে না। এই অবস্থায় দিশাহারা বাসিন্দারা। আমপানের দু’দিন পরে বিধাননগর পুর এলাকার ছবিটা এমনই। বাসিন্দাদের বড় অংশের অভিযোগ, প্রশাসনের অস্তিত্ব টের পাওয়া যাচ্ছে না। কোনও সহযোগিতা পাচ্ছেন না তাঁরা।

Advertisement

শুক্রবার বিধাননগর পুর প্রশাসনের একাংশ জানান, সীমিত ক্ষমতা নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। মোবাইল বা ফোন সংযোগ না থাকায় সমস্যা বেড়েছে। তবে কাউন্সিলরেরা নিজের এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

কেষ্টপুর, বাগুইআটি, জগৎপুর থেকে শুরু করে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার ছবিও ভয়াবহ। কোথাও প্রশাসনের কর্মীরা গাছ কাটছেন, কোথাও বাসিন্দারাও হাত লাগিয়েছেন। শুক্রবার সল্টলেকের এ ই ব্লকে কিছু বাসিন্দাকে গাছ কাটতে দেখা যায়। বহু বাসিন্দার অভিযোগ, রাজারহাট পরিষেবা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত। কেষ্টপুরের হানাপাড়ার বাসিন্দারা জানান, পুরসভার জলের ট্যাঙ্কার আসেনি। তাঁদের প্রশ্ন, পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ট্যাঙ্কার ভরে রাখা হয়নি কেন? তাতে অন্তত খাবার জলটা মিলত।

Advertisement

রাজারহাট-গোপালপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু কাঁচা ও পাকা বাড়ি, জগৎপুর-সহ একাধিক বাজার। অভিযোগ, কেব্‌ল ও বিদ্যুতের তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকলেও তা সরানোর তৎপরতা দেখা যায়নি। একই ছবি সলুয়ায়। মেয়র পারিষদ প্রণয় রায় বলেন, ‘‘দু’দিন পরে বিদ্যুৎকর্মীদের এনে পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। মশা মারার কর্মীদের দিয়ে আমার ওয়ার্ডে গাছ কাটাচ্ছি। কোনও মতে একটা জলের ট্যাঙ্কার পেয়েছি।’’ রাজারহাট গ্রামীণ এলাকার অবস্থা আরও করুণ। স্থানীয় সূত্রের খবর, অসংখ্য বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। বিদ্যুৎ নেই। কিন্তু রাজারহাট পঞ্চায়েত বা বিডিও অফিসে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। চাষেরও বহু ক্ষতি হয়েছে।

নিউ টাউন ও সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে হকারদের বহু দোকান ভেঙেছে। করোনার ধাক্কার সঙ্গে এই বিপর্যয়ে তাঁরা ভেঙে পড়েছেন। নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির এক কর্তা জানান, নিউ টাউনের ১ নম্বর অ্যাকশন এরিয়ায় কিছু জায়গায় জল জমে রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পাম্প চালানো যাচ্ছে না। গাছ সরানোর কাজও হচ্ছে।

এ দিন সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা সম্ভব হলে বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) বীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, যে ক’টি জলের ট্যাঙ্কার ছিল, সবই পাঠানো হয়েছে। বিদ্যুৎ না-থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এত বড় দুর্যোগে বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে পাম্প চালানো যায়নি। তবে দ্রুত জল সরবরাহ পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। পড়ে যাওয়া গাছ দ্রুত সরানোর চেষ্টা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন