বেশি বিমান চালাতে ট্যাক্সিওয়ের দাওয়াই

রানওয়ে যত তাড়াতাড়ি খালি করে বিমান বেরিয়ে যেতে পারবে, তত বেশি বিমান ওঠানামা করতে পারবে সেই বিমানবন্দর থেকে— এটাই মূল মন্ত্র।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৩
Share:

রানওয়ে যত তাড়াতাড়ি খালি করে বিমান বেরিয়ে যেতে পারবে, তত বেশি বিমান ওঠানামা করতে পারবে সেই বিমানবন্দর থেকে— এটাই মূল মন্ত্র।

Advertisement

মঙ্গলবার কলকাতা বিমানবন্দরের অফিসারদের কাছে সেই ‘মন্ত্র’টিই আরও এক বার আউড়ে গেলেন ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিমানবন্দরের চার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) অফিসার। কলকাতায় দু’টি সমান্তরাল রানওয়ে রয়েছে। সেই দু’টি রানওয়ের চারটি প্রান্ত দিয়ে বিমান নামার পরে যাতে কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যে রানওয়ে খালি করে চলে যেতে পারে, তার জন্য চারটি র‌্যাপিড ট্যাক্সিওয়ে বানানোর পরামর্শ দিয়ে গেলেন ড্যানিশ বিশেষজ্ঞরা।

তাঁরা জানিয়েছেন, কোপেনহেগেনেও দু’টি সমান্তরাল রানওয়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণের নিয়ম অনুযায়ী, সমান্তরাল দুই রানওয়ে দিয়ে এক সঙ্গে বিমান ওঠানামা করতে গেলে দু’টি রানওয়ের মাঝে কমপক্ষে যত ব্যবধান থাকার কথা, তা কোপেনহেগেনে নেই। কলকাতাতেও নেই। তা সত্ত্বেও কলকাতায় যেখানে ঘণ্টায় ৩৫টি বিমান ওঠানামা করে, সেখানে কোপেনহেগেনে করে ৮৩টি। তার প্রধান কারণ, তাদের দু’টি রানওয়ের চারটি প্রান্তে চারটি র‌্যাপিড ট্যাক্সিওয়ে রয়েছে। বিমান রানওয়ের মাটি ছোঁয়ার পরে গতি কমানোর ফাঁকেই হুশ করে রানওয়ে ছেড়ে বেরিয়ে যায়। ফলে, পিছনের বিমান তাড়াতাড়ি নেমে আসতে পারে।

Advertisement

কলকাতায় র‌্যাপিড ট্যাক্সিওয়ে না থাকায়, নামার সময়ে দু’টি বিমানের মাঝে অন্তত সাড়ে দশ কিলোমিটার ব্যবধান রাখতে হয়। কোপেনহেগেনে সেই ব্যবধান সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার।

এর পাশাপাশি, কলকাতার দ্বিতীয় রানওয়ের সমান্তরাল যে ট্যাক্সিওয়ে এখন আছে, সেটির দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কথাও বলেছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সে ক্ষেত্রে ওই ট্যাক্সিওয়ের শেষ প্রান্তে এসে বিমান অপেক্ষা করতে পারবে। কোনও বিমান নেমে দ্বিতীয় রানওয়ে খালি করে বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপেক্ষমাণ সেই বিমান রানওয়েতে ঢুকে আসতে পারবে। এতে সময়ও বাঁচবে।

গত সপ্তাহে শহরে এসে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র এই ড্যানিশ বিশেষজ্ঞ দলের আসার কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন। সোমবার থেকে তাঁরা কাজ শুরু করে দেন। বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার বরুণ কুমার সরকার জানিয়েছেন, সোম ও মঙ্গল দু’দিন ধরে তাঁরা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ঘুরে দেখেন। বৈঠক করেন কর্তাদের সঙ্গে। যেখান থেকে বিভিন্ন বিমানকে পার্কিং বে-তে পাঠানো হয়, সেই কন্ট্রোল রুমও ঘুরে দেখেন। জিপে করে রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়েতে ঘোরেন। যাত্রী নিরাপত্তার নিরিখে এই মুহূর্তে যে ধরণের আধুনিক ব্যবস্থায় এ শহর থেকে বিমান ওঠানামা করছে তাতে সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছেন কোপেনহেগেনের বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার কলকাতা থেকে ওই চার জনের দলটি দিল্লি উড়ে গিয়েছেন। জানা গিয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরের মতো দিল্লিতেও কী করে এক সঙ্গে আরও বেশি বিমান ওঠানামা করতে পারে সে সমীক্ষাও তাঁরা চালাবেন। ডেনমার্ক ফিরে গিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে পাঠাবেন দিল্লিতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement