শ্রীময়ী চট্টোপাধ্যায়
দক্ষিণ কলকাতার এক আবাসনে নিজের ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গেল এক চিকিৎসকের দেহ। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চিকিৎসকের নাম শ্রীময়ী চট্টোপাধ্যায় (৪৭)। তিনি চক্ষু বিশেষ়জ্ঞ ছিলেন।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ওই বহুতলের চার নম্বর টাওয়ারের ৫ডি ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেখা যায়, আধশোয়া অবস্থায় বিছানায় পড়ে শ্রীময়ীদেবীর দেহ। তাঁর স্বামী সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, তিনি ও তাঁদের এগারো বছরের মেয়ে তখন বাড়ি ছিলেন না। বিকেল ৪টে নাগাদ ফেরেন তাঁরা। সন্দীপবাবুর দাবি, অনেক ডেকেও স্ত্রীর সাড়া পাননি। ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে তাঁরা ঢোকেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, বাড়িতে ঢুকে তাঁরা দেখেন, গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় জানালার গ্রিল থেকে ঝুলছে ওই চিকিৎসকের দেহ। পুলিশ জানায়, সন্দীপবাবু নিজেই দেহটি নামিয়ে খাটে শোয়ান। তার পরে খবর যায় পুলিশে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, কিছু দিন ধরে পারিবারিক অশান্তির মধ্যে ছিলেন ওই চিকিৎসক। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন শ্রীময়ীদেবী। পুলিশ জানায়, সন্দীপবাবুও চক্ষু বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘকাল ব্রিটেনের এডিনবরায় বসবাস করেছেন তাঁরা। কয়েক বছর হল এ শহরে এসেছেন। সেই থেকে মধ্য কলকাতার একটি নামী হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শ্রীময়ীদেবী। চোখের জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য নামডাক ছিল তাঁর। কিন্তু অবসাদ বেড়ে যাওয়ায় গত ছ’মাস সব কাজই বন্ধ রেখেছিলেন তিনি।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট মিলেছে। ওই দম্পতির মেয়ের উদ্দেশে তাতে লেখা, ‘‘ভালবাসার প্রতিদান পেলাম না। চলে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’’ তবে এই চিরকুটে হাতের লেখা আদৌ শ্রীময়ীদেবীর কি না, তা দেখবে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, ঘটনাটি আদৌ আত্মহত্যা, না অন্য কিছু, তা দেখা হচ্ছে। কারণ, জানলার গ্রিল থেকে গলায় ফাঁস দিলে কী ভাবে মৃত্যু হতে পারে, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ।