Jadavpur University Student Death

ছাত্রদের বাধাতেই আইন প্রয়োগ করা যায় না! পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে দাবি করলেন যাদবপুরের ডিন

লালবাজারে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বৃহস্পতিবার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ১৯:৪১
Share:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়। ছবি: সংগৃহীত।

আইন আছে। কিন্তু তা প্রয়োগ করা কঠিন। কারণ, ছাত্রছাত্রীরাই আইন প্রয়োগে বাধা দেন! বৃহস্পতিবার বিকেলে লালবাজারে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় এই দাবি করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়। তদন্তকারীদের সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রজতকে প্রায় তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিকেল ৩টে নাগাদ কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে হাজিরা দেন তিনি। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বেরিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রজতকে যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছে।

Advertisement

তদন্তকারীদের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রজতের কাছে প্রথমেই জানতে চাওয়া হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টস হিসাবে তাঁর ভূমিকা কী? ডিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যাদবপুরে র‌্যাগিং-বিরোধী কোনও গোষ্ঠী বা দল (স্কোয়াড) আছে কি না। তদন্তকারীদের দাবি, রজত তাঁদের জানিয়েছেন, র‌্যাগিং-বিরোধী স্কোয়াড বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। যদি সেখানে কিছু খামতি থাকে, তবে তিনি তা শুধরে নেবেন বলেও তদন্তকারীদের জানিয়েছেন ডিন। যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরার নজরদারি আছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে ডিনের কাছে।

হস্টেল পরিচালনায় সুপারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রজত। তাঁর কাছ থেকে তদন্তকারীরা ঘটনার রাতের বর্ণনা জানতে চান। ডিন কী ভাবে ওই দিনের ঘটনার কথা জেনেছিলেন, কে তাঁকে ফোন করেছিলেন, কতটুকু তিনি জানতে পেরেছিলেন— এই সব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, জবাবে রজত জানিয়েছেন, গত ৯ অগস্ট রাত ১০টা ৫ মিনিটে হস্টেল থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। ডিনকে জানানো হয়, হস্টেলে এক ছাত্রকে ‘পলিটিসাইজ়ড’ করা হচ্ছে। ফোন পেয়ে ১০টা ৮ মিনিটে ডিন হস্টেলের সুপারকে ফোন করেন এবং বিষয়টি জানান। কিন্তু সুপার তার পর আর কিছু জানাননি বলে দাবি। রজত পুলিশকে জানিয়েছেন, রাত ১২টা ৮ মিনিটে হস্টেলের সুপার আবার তাঁকে ফোন করেন এবং গোটা ঘটনাটির বিষয়ে জানান।

Advertisement

লালবাজার সূত্রে খবর, ডিনের বয়ানে পুলিশের মনে হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেখানকার হস্টেলে আইনশৃঙ্খলার ঘাটতি রয়েছে। পুলিশের প্রশ্নের জবাবে ডিন জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের বাধার কারণেই আইন থাকলেও তা প্রয়োগ করা কঠিন। ডিনের এই বয়ানের পর হস্টেল সুপারকেও প্রয়োজনে লালবাজারে তলব করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে বুধবার রজতকে ডেকে পাঠিয়েছিল লালবাজার। কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলছে। তাঁকে ‘ঘেরাও’ করে রাখা হয়েছে। সেই কারণে তিনি পুলিশের তলবে সাড়া দিতে পারছেন না। এর পর বৃহস্পতিবার আবার তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু লালবাজারে হাজিরা দিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে যা প্রশ্ন করা হয়েছিল, অধিকাংশের জবাবেই রেজিস্ট্রার জানিয়েছিলেন, ডিন এ সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন