প্রতীকী ছবি।
শারীরিক অবস্থার অবনতির পাশাপাশি প্রাণহানির ঝুঁকিও বাড়ছে— তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে নিয়মিত অক্সিটোসিন পাওয়ার আর্জি জানাল স্ত্রী-রোগ ও বন্ধ্যত্ব নিয়ে কাজ করা চিকিৎসকদের সংগঠন ‘দ্য ফেডারেশন অব অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটিজ অব ইন্ডিয়া’ (ফগসি)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী, মহিলাদের প্রসব পরবর্তী চিকিৎসায় অক্সিটোসিন থাকা জরুরি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ রুখতে এই ওষুধ কাজ করে। কিন্তু
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ জারি করে জানিয়েছে, এই ওষুধের অপব্যবহার হচ্ছে। তাই কর্ণাটকের একমাত্র সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা থেকেই এই ওষুধ প্রস্তুত হবে। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মহিলাদের চিকিৎসায় এর জেরে সমস্যা হচ্ছে।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই প্রস্তুতকারী সংস্থার পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তার পরে, দেশ জুড়ে অক্সিটোসিনের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, একটি মাত্র সংস্থা সেটা পূরণ করতে পারবে কি না সে নিয়েও সংশয় রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, গরুর দুধের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে গরুর দেহে দেওয়া হত। সেই অপব্যবহার রুখতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু চিকিৎসকেরা প্রশ্ন তুলছেন, অপব্যবহার রুখতে মহিলাদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধের জোগান কমিয়ে দেওয়া কতখানি যুক্তিসঙ্গত।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, দেশের কয়েকশো সংস্থা এই ওষুধ প্রস্তুত করত। তাদের জানানো হয়েছে, বিদেশে এই ওষুধ বিক্রি করার অনুমতি থাকলেও দেশের বাজারে বিক্রি করা যাবে না। সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল প্রয়োজনের হিসেব কর্ণাটকের ওই সংস্থার কাছে জমা করবে। সেই হিসেব মতো ওষুধ পৌঁছবে। এখানেই সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। তাঁদের আশঙ্কা, যে বিপুল চাহিদা রয়েছে, তা একটি মাত্র সংস্থার জোগান দেওয়া কঠিন। পাশাপাশি, এ দেশের মহিলাদের একটা ব়ড় অংশ স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিংবা কোনও ছোট প্রতিষ্ঠানে সন্তান প্রসব করেন। বড় বড় হাসপাতাল ওষুধ জোগার
করতে পারলেও ছোট কেন্দ্রগুলি পারবে না। ফলে বিপদ বা়ড়বে মহিলাদের।
ফগসির তরফে পাঠানো চিঠিতে দেশের প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার স্ত্রী-রোগ ও বন্ধ্যত্ব নিয়ে কাজ করা চিকিৎসক স্বাস্থ্য মন্ত্রককে জানিয়েছেন, অক্সিটোসিন বন্ধ করে দেওয়া হু-এর নির্দেশ অমান্যের পাশাপাশি, মহিলাদের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেওয়া। যা অত্যন্ত দায়িত্বহীন।