শহরে জ্বরে মৃত্যু দু’জনের

এ নিয়ে ছ’দিনে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যু হল বিধাননগরে। তার মধ্যে দত্তাবাদেই দু’জনের মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

আকাশ চৌধুরী

জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফের মৃত্যু দত্তাবাদে। মৃতের নাম আকাশ চৌধুরী (১০)। তার রক্ত পরীক্ষায় এনএস-১ পজিটিভ ধরা পড়েছিল। আকাশের বাড়ির কাছেই দিন ছ’য়েক আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল নারায়ণ শ্রেষ্ঠ নামে এক কিশোরের। ওই দিন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছিলেন বাগুইআটির রিঙ্কু ঘোষও। বুধবার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বেহালায় মৃত্যু হয় ১২ বছরের এক কিশোরের।

Advertisement

এ নিয়ে ছ’দিনে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যু হল বিধাননগরে। তার মধ্যে দত্তাবাদেই দু’জনের মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আকাশের দেড় বছরের ছোট বোনকে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে এ দিন ভর্তি করা হয়। সে-ও জ্বরে আক্রান্ত। তাদের মা পূজাও সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। এর আগে দত্তাবাদে আরও দুই কিশোর জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল।

এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ দুপুরে দত্তাবাদ রোড অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে যান বিধায়ক সুজিত বসু, স্থানীয় ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) রাজেশ চিরিমার। বিধায়ক জানান, পরিষেবায় খামতি থাকলে দ্রুত তা পূরণ করা হবে। কাউন্সিলর জানান, তাঁর ছেলেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে এখন সুস্থ।

Advertisement

পুরসভার অবশ্য দাবি, ডেঙ্গি রোধে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। ওই এলাকায় স্বাস্থ্য-শিবির করার পরিকল্পনা করছে বিধাননগর পুরসভা। বাসিন্দাদের একাংশ জানান, আক্রান্তের বাড়ির পাশেই কয়েক দিন ধরে জল জমেছিল। বৃহস্পতিবার সেই জল সরানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার জ্বরে আক্রান্ত হয় কাঁকুড়গাছির একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আকাশ। বুধবার প্রথমে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে পরে রাতে আকাশকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান বাবা রঞ্জিত চৌধুরী। প্লেটলেট প্রায় দশ হাজারে নেমে যায়। বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা নাগাদ তার মৃত্যু হয়।

দিন পনেরো আগেও বিধাননগর পুর এলাকায় জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৫। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৬৩। তার মধ্যে আইজিএম পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছে আট জনের। অন্তত বিধাননগর পুরসভার তেমনই দাবি।

কিন্তু মশাবাহিত রোগের এই দ্রুত বৃদ্ধি কেন? রুদ্ধ নিকাশি, আবর্জনা জমে থাকা, সচেতনতার অভাব-সহ নানা কারণ উঠে এসেছে প্রশাসনের পর্যালোচনায়। পুরসভা সূত্রের খবর, জানুয়ারি থেকে লাগাতার কাজের জেরে সাফল্য এলেও গত পনেরো দিনেই ছবিটা বদলে গিয়েছে। পুর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর দাবি করেন, ‘‘আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। ব্যক্তি-মালিকানাধীন পুকুর এবং কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প এলাকা ঘিরে সমস্যা রয়েছে।’’

মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘প্রয়োজনে স্বাস্থ্য-শিবির করা হবে। পাশাপাশি বিশেষ অভিযান চালানো হবে দত্তাবাদে।’’

অন্য দিকে, বুধবার রাতে বেহালায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুরজ শঙ্কুয়া নামে এক কিশোরের। পরিবারের দাবি, তার ডেঙ্গি হয়েছিল। রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায়, প্লেটলেট ২৫ হাজারে নেমে গিয়েছে। যে চিকিৎসকের দায়িত্বে ছিল ওই কিশোর, বৃহস্পতিবার নিউ আলিপুরে তাঁর ক্লিনিকে ঢুকে সুরজের পরিজনেরা ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। ওই চিকিৎসককে মারধরও করা হয়। পুলিশ গিয়ে লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন