ছবি: পিটিআই।
বেহাল দশার জেরে নতুন করে তৈরি করতে হবে কলকাতা বিমানবন্দরের ‘কিলো’ ট্যাক্সিওয়ে।
শুক্রবার বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই ট্যাক্সিওয়ে পুরো খুঁড়ে ফেলে একেবারে নতুন করে গড়তে হবে। একটি বিকল্প ট্যাক্সিওয়ে বাড়িয়ে রানওয়ে পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া না গেলে কিলো-কে বন্ধ করা সম্ভব নয়।’’ গত সপ্তাহেই ওই বিকল্প ‘এফ’ ট্যাক্সিওয়ে বাড়ানোর টাকা মঞ্জুর হয়েছে বলেও কৌশিকবাবু জানিয়েছেন। এখন ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)-এর চূড়ান্ত অনুমতির জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। সেই অনুমোদন এসে গেলেই শুরু হবে কাজ, যা শেষ হতে লেগে যাবে কয়েক মাস। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কাজ শুরু হওয়ার আগের কিছু দিন জোড়াতাপ্পি দিয়ে চালানো হবে কিলো ট্যাক্সিওয়ে।
কম সময়ের মধ্যে যাতে বেশি সংখ্যক বিমান ওঠানামা করতে পারে, তার জন্যই তৈরি করা হয়েছিল কিলো ট্যাক্সিওয়ে। ওই ট্যাক্সিওয়ে বেশি ক্ষণ বন্ধ রাখলেই কলকাতা থেকে ছেড়ে যাওয়ার বিমানগুলি রানওয়েতে বহু ক্ষণ আটকে থাকে। যার জেরে কলকাতায় নামতে আসা বিমানেরও দেরি হয়ে যায়।
বিরাটির দিকে প্রধান রানওয়ের একেবারে শেষ প্রান্ত থেকে এই কিলো ট্যাক্সিওয়ে বেরিয়ে দ্বিতীয় রানওয়ে চিরে উঠে এসেছে ‘আলফা’ ট্যাক্সিওয়েতে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কিলো ও আলফা-র সংযোগস্থলের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, সেখান দিয়ে যাতায়াতের সময়ে বিমানের চাকা রীতিমতো লাফাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার কিলো এবং আলফা বন্ধ রেখে প্রাথমিক সারানোর কাজ করার ফলে উড়ান চলাচলে খুব সমস্যা হয়েছে। কলকাতা থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্য বিমানবন্দরে উড়ে গিয়েছে একাধিক বিমান। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সারা দিন ধরেই কলকাতার মাথায় ১২ থেকে ১৪টি বিমান চক্কর কেটেছে। বহু উড়ানের ছাড়তে দেরি হয়েছে। আগরতলা থেকে মাত্র ৩০ মিনিটের পথ পেরিয়ে কলকাতার মাথায় এসে ৫০ মিনিট চক্কর কাটার পরে শহরে নামার সুযোগ পেয়েছে একটি বিমান। ফলে জ্বালানিও খরচ হয়েছে বেশি। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দূষণও। কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, বাধ্য হয়ে শুক্রবারও বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কিলো ট্যাক্সিওয়ে বন্ধ রেখে সারানোর কাজ চলেছে। যার জেরে এ দিনও বেশ কিছু ক্ষণ উড়ান ওঠানামায় দেরি হয়েছে।
বিমানবন্দরের এক অফিসার জানিয়েছেন, কলকাতায় এখন একটি বিমান নেমে আসার আড়াই মিনিটের মধ্যেই একটি বিমান উড়ে যায় এবং আরও একটি বিমান নেমে আসে। সেটা সম্ভব হয় কিলো ট্যাক্সিওয়ের জন্যই। যে বিমানগুলি বিরাটির দিক থেকে উড়ে যায়, সেগুলি কিলো ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে সরাসরি রানওয়ের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যায়। রানওয়েতে ঢুকে সঙ্গে সঙ্গে উড়ে যায় বলে বেশি ক্ষণ সেখানে আটকে থাকতে হয় না। ফলে যে সমস্ত বিমান নামার অপেক্ষায় থাকে, সেগুলিকে তাড়াতাড়ি নামিয়ে আনা যায়।
বৃহস্পতিবার কিলো ট্যাক্সিওয়ে বন্ধ থাকায় তার আগের ব্রাভো ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে বিমানগুলিকে রানওয়েতে তোলা হয়েছে। রানওয়েতে পৌঁছনোর পরে উত্তর দিকে গড়িয়ে গড়িয়ে প্রধান রানওয়ের শেষ প্রান্তে পৌঁছতে হয়েছে। ফলে কলকাতা থেকে ছাড়ার বিমানগুলি বেশ কিছু ক্ষণ আটকে থেকেছে রানওয়েতে। সেই বিমান রানওয়ে ছেড়ে উড়ে না যাওয়া পর্যন্ত আকাশে অপেক্ষা করতে হয়েছে নামতে আসা বিমানগুলিকে। এক অফিসারের কথায়, ‘‘অন্য দিন আড়াই মিনিটের মধ্যে দু’টি বিমান নামে। বৃহস্পতিবার ৬ মিনিট লেগেছে দু’টি বিমানকে নামিয়ে আনতে।’’