এই সেই কার্ড। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গি নিধনের কাজে কোনও রকম ফাঁকিবাজি বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দিলেন রাজপুর-সোনারপুর পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, গত বছর থেকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচার ছাড়াও প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে পুরসভার তরফে কর্মীদের পাঠানো শুরু হয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগ আসছে, কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে যাচ্ছেন না। এলাকার কয়েকটি বাড়ি ঘুরেই পুরসভায় রিপোর্ট পেশ করছেন তাঁরা। পরে ডেঙ্গি আক্রান্ত এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানাও গিয়েছে, ওই এলাকার প্রতি বাড়িতে পুরসভার তরফে লার্ভা নিধন তো দূর অস্ত্, পুরকর্মীরাই যাননি। গত বছর এমনই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন পুরকর্তারা। এর জেরে পরিদর্শনে গিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের সামনে পড়তে হয়েছিল তাঁদের।
পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস জানান, ‘‘এ বছর ৩৫টি ওয়ার্ডে প্রায় ৭০০ কর্মীকে এলাকা ভিত্তিক এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতি বাড়িতে একটি কার্ড দেওয়া রয়েছে। তাতে পরিদর্শনের তারিখ উল্লেখ করে সই করবেন ওই কর্মীরা। ইতিমধ্যেই সব বাড়িতে কার্ড বিলি হয়ে গিয়েছে। সপ্তাহে এক দিন প্রতি বাড়ি এবং আবাসনের ফ্ল্যাটগুলোতে ঢুকে জমা জলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন কর্মীরা।’’ পুরসভা সূত্রে খবর, যদি কোনও নাগরিক ডেঙ্গি প্রতিরোধে সহযোগিতা না করেন, তা হলে কর্মীরা পুরসভায় রিপোর্ট করবেন। পুরসভা তার ভিত্তিতে ওই নাগরিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। এক পুরকর্তার কথায়, বহু বাসিন্দাই পুর কর্মীদের সহযোগিতা করেন না বলে অভিযোগ ওঠে। এই ব্যবস্থায় তাঁদের চিহ্নিত করা যাবে। নির্মীয়মাণ বাড়ি-ফ্ল্যাটের মালিক এবং প্রোমোটারদেরও ডেঙ্গি প্রতিরোধে কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রায় মাস চারেক আগে পুকুর মালিকদের জন্যও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল পুরসভা। পুকুর সংস্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল মালিকদের। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় দু’হাজার পুকুর রয়েছে। ওই সব পুকুর পরিষ্কার করা হয়েছে কি না, এ বার তা যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘যদি কোনও মালিক পুকুর সাফ না করেন, তা হলে পুরসভা তা পরিষ্কার করে সেখানে মাছ চাষ করবে। সেই মাছ বিক্রি করে পুকুর পরিষ্কারের টাকা তুলে নেওয়া হবে।’’ এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘অধিকাংশ পুকুরের ক্ষেত্রে একাধিক শরিক থাকায় সাফাইয়ের খরচ নিয়ে মালিকেরা নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। তাই পুরসভাই ওই সব পুকুর পরিষ্কার করবে। এখনও পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের পুকুরে গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে বলে দাবি পুরসভার।