ছিল ভাগাড়, হচ্ছে উদ্যান, ধাপার সেই পরিচিত জঞ্জালের পাহাড় এখন চেনাই দায়!

মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ধাপার জঞ্জালের পাহাড়ে গড়ে ওঠা ওই উদ্যানে আরও কাজ রয়েছে। এ বার কলকাতা পুরসভাকে দায়িত্ব তুলে দেবে পরিবেশ দফতর। তার পরেই ওই স্থানে শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ শুরু হবে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৩
Share:

ভোলবদল: আবর্জনার পাহাড়েই সবুজায়ন। নিজস্ব চিত্র

আক্ষরিক অর্থে ছিল ভাগাড়, হচ্ছে উদ্যান। এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ রূপ পেলে শহরবাসী পাবেন বেড়াতে যাওয়ার নতুন ঠিকানা।

Advertisement

সেই ঠিকানা তৈরি করতেই জোরকদমে কাজ চলছে। ধাপার ১২ একর জমিতে গড়ে ওঠা জঞ্জালের পাহাড়ের মাথা সমান করে দেওয়া হয়েছে। এখন সেখানে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ইডেন গার্ডেন্সের মতোই সবুজ ঘাসের গালিচা। সেই পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে দেখা গেল, প্রায় ৩০ বিঘে জায়গা জুড়ে চার দিক থেকে স্প্রিঙ্কলার দিয়ে জল ছেটানো হচ্ছে। বিস্তৃত সেই উদ্যানে দাঁড়ালেই চোখে পড়ছে নিউ টাউন, নব দিগন্তের বড় বড় অট্টালিকা আর অজস্র ভেড়ি, জলাশয়। চূড়ায় ওঠার জন্য পাহাড়ের রাস্তার মতো পেভার ব্লক বসিয়ে পথ তৈরি করা হয়েছে। বোঝার উপায় নেই যে বিস্তৃত উদ্যানের নীচেই রয়েছে দীর্ঘ বছর ধরে ফেলা শহরের আবর্জনার পাহাড়। কোনও দুর্গন্ধ নেই।

অথচ মাস কয়েক আগেও খাবারের সন্ধানে দিনভর চিল-শকুন ঘুরপাক খেত সেখানে। সেই অভ্যাসের আভাস মেলে এখনও। অভ্যাসবশত এখনও চিল-শকুন ঘুরপাক খেতে খেতে নেমে আসছে ওই চূড়ায়। কিছু খোঁজার চেষ্টা করে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে দূর আকাশে। সারা কলকাতার জঞ্জাল ফেলার ওই জায়গায় আবর্জনা থেকে জিনিস কুড়িয়ে যাঁদের দিনযাপন হয়, তাঁরাই শুধু যেতেন। আর যেতেন গাড়িতে করে শহরের আবর্জনা নিয়ে যাওয়া কর্মীরা। বহু দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া বর্জ্যের দুর্গন্ধ বুঝিয়ে দিত, ধাপা আসছে। শুধু তাই নয়, এই আবর্জনার কারণে ধাপাকে ঘিরে গড়ে ওঠা বসতির জনস্বাস্থ্যে কুপ্রভাব পড়ছে দীর্ঘদিন ধরে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ধাপার পুরনো জঞ্জালের পাহাড়কে সবুজে মুড়িয়ে দেওয়ার এই উদ্যোগ। যার যৌথ উদ্যোক্তা রাজ্য পরিবেশ দফতর এবং কলকাতা পুরসভা। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করেছে পরিবেশ দফতর। রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানান, ওখানে জঞ্জালের পাহাড় ছিল। প্রথমে চূড়া সমান করা হয়েছে। এর পরে ওই জায়গা দূষণমুক্ত করতে রাসায়নিক দেওয়া হয়েছে। বালি, বিশেষ ধরনের লাইনার দেওয়া হয়েছে। বোনা হয়েছে ঘাস। এ সব কাজে প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আপাতত পরিবেশ দফতরের কাজ শেষ।

মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ধাপার জঞ্জালের পাহাড়ে গড়ে ওঠা ওই উদ্যানে আরও কাজ রয়েছে। এ বার কলকাতা পুরসভাকে দায়িত্ব তুলে দেবে পরিবেশ দফতর। তার পরেই ওই স্থানে শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন