রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে সব থেকে বেশি বিদেশি ছাত্রছাত্রী আছেন যাদবপুরেই। কিন্তু তাঁদের থাকার জন্য ওখানে কোনও পৃথক বন্দোবস্ত নেই। তাই আরও বিদেশি পড়ুয়া টানতে তাঁদের জন্য এ বার আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করতে চলেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। আগামী বছরের প্রথম দিকেই এই হস্টেল চালু হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
একই ভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রকল্পে বিদেশের যে-সব অধ্যাপক-গবেষক যাদবপুরে আসেন, তাঁদের থাকার জন্যও আলাদা বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের আশা, এই জোড়া ব্যবস্থার দৌলতে অচিরেই আরও বেশি বিদেশি ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-গবেষক পাবে যাদবপুর।
ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান এবং কলা এই তিনটি বিভাগে ভর্তির জন্য প্রতি বছর দেড়শো থেকে দু’শো বিদেশি পড়ুয়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু ভর্তির পরে তাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তার প্রধান কারণ, এত দিন পর্যন্ত বিদেশি পড়ুয়াদের জন্য যাদবপুরে আলাদা হস্টেল ছিল না। মূল হস্টেলেরই কয়েকটি ঘর
তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে। কিন্তু তাতে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা পূরণ হচ্ছিল না বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
হস্টেলের নির্দিষ্ট কয়েকটি ঘরে স্থান সঙ্কুলান না-হওয়ায় অধিকাংশ বিদেশি ছাত্রছাত্রীকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে ভাড়াবাড়িতে থাকতে হয়। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস মঙ্গলবার জানান, এই কারণেই আলাদা হস্টেলের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। এই মুহূর্তে যাদবপুরে প্রায় ১০০ জন বিদেশি পড়ুয়া রয়েছেন। এঁদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন।
বিদেশি পড়ুয়াদের চাহিদা মেটাতে যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই একটি বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় ভাড়া নিয়েছেন। আপাতত প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দিয়ে বাড়িটিকে সাজানোগোছানোর কাজ চলছে। মার্চের
মধ্যেই বিদেশি পড়ুয়াদের জন্য ওই হস্টেল চালু করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
বিদেশি অধ্যাপক, গবেষকদের জন্যও পৃথক অতিথিনিবাসের ব্যবস্থা হচ্ছে। উপাচার্য জানান, বিদেশি অধ্যাপক, গবেষকেরা এলে চক্রবেড়িয়া রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়িতে তাঁদের রাখা হবে। বিদেশি পড়ুয়ারা তো যাদবপুরে আসছেনই। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অব অ্যাকাডেমিক নেটওয়ার্কের অঙ্গ হিসেবে বিভিন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-গবেষকেরাও আসেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে চক্রবেড়িয়া রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে-বাড়ি আছে, সেখানে চালু হতে চলেছে গেস্ট হাউস। চক্রবেড়িয়া রোডের সেই গেস্ট হাউসের উদ্বোধনও মার্চের মধ্যে করার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
‘‘বিদেশি পড়ুয়া, গবেষকেরা যাদবপুরে আসার বিষয়ে খুবই আগ্রহ দেখান। কিন্তু তাঁদের জন্য এত দিন আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা ছিল না। এ বার সেই সমস্যা কিছুটা হলেও মিটবে,’’ বললেন, উপাচার্য।