প্রতীকী ছবি।
রোগ সারাতে চিকিৎসা নয়, বরং রোগটাকেই যাতে আটকানো যায়, সেই ব্যাপারে জোর দিতে হবে। যার জন্য প্রয়োজন প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিকাঠামোর মান উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় সর্বাধিক নজরদারি। ‘পঞ্চম মেডিকন আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সম্মেলন’ থেকে এমনই দাবি উঠে এল। পিয়ারলেস হাসপাতাল, বি কে রায় ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই সম্মেলনে এ বার সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে এডিনবরার রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ানস অব ইন্ডিয়া (পশ্চিমবঙ্গ চ্যাপ্টার)। সল্টলেকের একটি হোটেলে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার, দু’দিন ধরে চলল সম্মেলন।
উদ্যোক্তাদের তরফে পিয়ারলেস হাসপাতালের অধিকর্তা চিকিৎসক সুজিত কর পুরকায়স্থ জানান, রোগ নিরাময়ে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, পরিকাঠামো নিয়েই আলোচনা হয় সর্বত্র। কিন্তু রোগের জন্মলগ্নেই তা নির্ণয় এবং নির্মূল করার ক্ষেত্রে অভাব ঘটছে। বিদেশে এখন সর্বাধিক জোর দেওয়া হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবায়। তিনি আরও জানান, সাধারণ ওষুধের গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতার প্রসারের প্রয়োজন। চিকিৎসা পরিষেবায় প্রযুক্তির উপরে মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীলতা এবং অনুপযুক্ত ব্যবহার নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ চিকিৎসকদেরই একাংশ।
সেই সূত্রেই আলোচনায় উঠে এসেছে প্রাথমিক স্তরে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে জেনারেল প্র্যাকটিশনার ও জেনারেল ফিজিশিয়ানের অভাবের প্রসঙ্গ। আলোচকদের একাংশের মতে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে পারদর্শী, কিন্তু প্রাথমিক স্তরে রোগ নির্ণয় করার মতো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগের।
চিকিৎসকদের ভুল ও গাফিলতিকে এক করে দেখা হচ্ছে চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ। চিকিৎসক অশোকানন্দ কোনার, অঞ্জনলাল দত্ত থেকে শুরু করে এডিনবরার রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস-এর সহ-সভাপতি চিকিৎসক অধ্যাপক দীপক দ্বারকানাথের মতে, এই প্রবণতাটি বিপজ্জনক। চিকিৎসক ব্রায়ান উ়ডের কথায়, ‘‘চিকিৎসায় অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি মেনে নেওয়ার জায়গায় নেই সমাজ। সব ত্রুটিকেই গাফিলতি ভাবা হচ্ছে। তাই এমন পরিবেশ দরকার, যেখানে ভুল-ত্রুটি হলে খোলামেলা ভাবে আলোচনা করা সম্ভব। যাতে দ্রুত সংশোধন করা যায়।’’