আর জি করের ওয়ার্ডে ঘুরছে কুকুর। ফাইল চিত্র
কুকুরদের নির্বীজকরণ কর্মসূচি যদি ঠিকঠাকই হয়, তা হলে একসঙ্গে ১৬টি কুকুরের বাচ্চা এন আর এস হাসপাতাল চত্বরে এল কী ভাবে? এত কুকুর ওই চত্বরে না থাকলে হয়তো মৃতের সংখ্যা কিছুটা কমত।
রবিবারের ঘটনার পরে এই প্রশ্নই তুলছেন পশুপ্রেমীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, গোটা ঘটনা কলকাতা পুরসভার নির্বীজকরণ কর্মসূচির সার্থকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ স্বেচ্ছাসেবী বা বেসরকারি সংস্থার কাছে নির্বীজকরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য একাধিক বার আবেদন করা হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
এক পশুপ্রেমীর বক্তব্য, ‘‘পুরসভা যে ভাবে কুকুরদের নির্বীজকরণ চালায়, তা অবৈজ্ঞানিক।’’ পথকুকুরদের নিয়ে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে সুস্মিতা রায় বলেন, ‘‘কুকুরদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি যে গতিতে হচ্ছে, আরও বেশি করে করা দরকার। আমরা সাধ্য মতো চেষ্টা করি। কিন্তু এর জন্য প্রচুর টাকা দরকার।’’ আর এক পশুপ্রেমীর বক্তব্য, ‘‘পোষ্যদের নির্বীজকরণের জন্য অনেককেই বেসরকারি বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উপরে ভরসা করতে হয়। কারণ, পুরসভা যে ওই কাজ ঠিকঠাক করে না, এ অভিযোগ বহু পুরনো।’’
যদিও এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘নির্বীজকরণের জন্য টাকা নেওয়াই অনৈতিক। সে কারণেই পুরসভার সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করতে রাজি হয়না স্বেচ্ছাসবী সংস্থাগুলি।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত শহরে ৭৮০০ কুকুরের নির্বীজকরণ করা হয়েছে। ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সোমবার জানান, এর ফলে প্রায় ৬০ হাজার কুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। এ দিন পুরসভার দু’টি দল এন আর এস হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখানে প্রয়োজন মতো নির্বীজকরণ কর্মসূচি চালানো হবে বলে জানিয়েছেন অতীনবাবু।
হাসপাতাল চত্বরে এত সংখ্যক কুকুরের ঘোরাফেরা নিয়ে ডেপুটি মেয়র জানিয়েছেন, অনেক প্রতিষ্ঠানই পুরসভার কাছে কুকুর তুলে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করে। কিন্তু, আইনত সেটা সম্ভব নয়। নির্বীজকরণের পরে তাই পুরসভা সংশ্লিষ্ট এলাকায় কুকুর ছেড়ে দিয়ে আসে। এ বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, ‘‘কুকুর-বিড়ালদের সরাতে গেলে অনেক পশুপ্রেমী সংস্থার বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়। তা সত্ত্বেও কুকুর-বিড়াল সরানোর কাজ করে, এমন সংস্থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে খবর দেওয়া হয়।’’