সাময়িক লাইসেন্স বাতিল অভিযুক্ত অটোচালকের

এক পুলিশকর্তা জানান, মোটর ভেহিক্‌লস  আইনের ১৯ (এফ) ধারা অনুযায়ী ওই চালকের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয় ছ’মাসের জন্য। ওই সময়ে তিনি কোনও গাড়ি চালাতে পারবেন না।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:২৪
Share:

অভিযুক্ত অটোচালক। ফাইল চিত্র।

নেতাজিনগর অটো-কাণ্ডে ছ’মাসের জন্য বাতিল হয়ে গেল অভিযুক্ত চালকের লাইসেন্স। এই সময়ের মধ্যে কোনও রুটেই অটো চালাতে পারবেন না অভিযুক্ত চালক। পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারের নির্দেশে শনিবার রাতে জামিনে মুক্ত ওই অটোচালককে ডেকে এনে তার লাইসেন্সটি বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারী অফিসারেরা।

Advertisement

গত বুধবার সন্ধ্যায় এন এস সি বসু রোডের ঊষা মোড় থেকে গড়িয়া যাওয়ার জন্য অটোয় ওঠেন বছর পঞ্চাশের এক মহিলা এবং তাঁর ছেলে। মহিলার বাঁ পায়ে সমস্যা থাকায় তিনি অটো চালকের পাশে বাঁ দিকের আসনে বসেন। তাঁর ছেলে বসে ছিলেন অটোর পিছনের আসনে। অভিযোগ, চলন্ত অটোয় ওই চালক তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। গড়িয়া মোড়ের কিছু আগে তিনি চলন্ত অটো থেকে লাফিয়ে নেমে পড়েন। সেখানে থাকা পুলিশকর্মীদের পুরো ঘটনাটি জানান তিনি। এর পরেই নেতাজিনগর থানার পুলিশ অটোচালক ইমান আলি খান ওরফে মামাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরদিন মামাকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং মামলার কেস ডায়েরি তলব করেন। শুক্রবার বিচারক ওই ঘটনার কেস ডায়েরি খতিয়ে দেখে অভিযুক্তকে জামিনে মুক্তি দেন। এক দিন জেলে থাকার পরে অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হয়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত অভিযোগকারিণী নিগৃহীতা মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে যোগ করেছেন।

Advertisement

কেন সাময়িক ভাবে লাইসেন্স বাতিল হল অভিযুক্ত অটোচালকের?

পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার আদালত থেকে মামা জামিনে মুক্ত হওয়ার পরেই নিগৃহীতা নিজের আতঙ্কের কথা জানান। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হলেও অভিযুক্ত কী ভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নিগৃহীতার পরিবার। তদন্তে কোনও গাফিলতির জেরেই কি জামিন, সেই প্রশ্নও ওঠে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে লালবাজার। নির্দেশ দেওয়া হয়, আইন মেনে অভিযুক্ত চালকের লাইসেন্স সাময়িক ভাবে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। এক পুলিশকর্তা জানান, মোটর ভেহিক্‌লস আইনের ১৯ (এফ) ধারা অনুযায়ী ওই চালকের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয় ছ’মাসের জন্য। ওই সময়ে তিনি কোনও গাড়ি চালাতে পারবেন না। পুলিশ জানিয়েছে, যে অটোতে ওই ঘটনা ঘটেছে, সেই অটোর মালিক চাইলে তা অন্য চালককে দিয়ে রাস্তায় নামাতে পারবেন।

লালবাজার সূত্রের খবর, এর আগেও শহরে অটোচালকের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত চালকের লাইসেন্স বাতিল করার মতো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এ বার ঘটনার পরেই যে ভাবে অটোচালকেরা ওই নিগৃহীতেকে হুমকি দিয়েছেন এবং ধৃতকে ছাড়ার দাবিতে দেড় দিন অটো বন্ধ রেখেছেন, তা ভাল ভাবে নেননি পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। সেই সঙ্গে আদলত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে যান ওই চালক। তাই পুলিশের একাংশ মনে করছেন, নিগৃহীতার পরিবারের আস্থা ফেরাতেই নেতাজিনগর অটো-কাণ্ডে অভিযুক্ত অটোচালকের লাইসেন্স সাময়িক ভাবে বাতিল করা হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন